তুষার বর্মণের জ্যাঠামশাই অরুণ বর্মণ। নিজস্ব চিত্র
মারধরের পর শম্ভু রায় গুলি চালিয়ে তাঁর ভাইপোকে খুন করেছেন বলে আদালতে সাক্ষ্য দিলেন তপসিখাতার তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণের জ্যাঠামশাই অরুণ বর্মণ।
গত ২২ জানুয়ারি তপসিখাতার জয়বাংলা হাটে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন তৃণমূল কর্মী তথা এক সময় দলের সহকারী বুথ সভাপতির দায়িত্ব সামলানো তুষার বর্মণ (২৫)। স্থানীয় পরোরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান শম্ভু রায়, গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সোনা রায় ওরফে বাপ্পা, বিদ্যুৎ রায় ও অরবিন্দ বর্মণের বিরুদ্ধে তাঁকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর পরই গ্রেফতার হয় বাপ্পা। পরে শম্ভু এবং বাকি দুজনকেও গ্রেফতার করা হয়। যদিও শম্ভু বাদে বাকি তিন জনই এই মুহূর্তে জামিনে মুক্ত।
সোমবার এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাক্ষীদের একাংশের বিরুদ্ধে এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বিদ্যুৎকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। যার জেরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় বলে দাবি। বিদ্যুতের অনুপস্থিতিতে ওই দিন তাঁর আইনজীবীর আর্জি মেনে সাক্ষ্য গ্রহণ স্থগিত রাখেন বিচারক। তবে মঙ্গলবার এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এ দিন সাক্ষ্য দেন তুষারের জ্যাঠামশাই অরুণ বর্মণ।
আইনজীবীদের সূত্রে খবর, এ দিন সাক্ষ্যে অরুণবাবু জানান, ঘটনার দিন রাত সাড়ে নটা নাগাদ তুষার তাঁকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, জয়বাংলা হাটে এক জনকে মারধর করা হচ্ছে। তুষার নিজে সেখানে যাচ্ছেন জানিয়ে অরুণবাবুকেও যেতে বলেন। সাক্ষ্যে অরুণ এ দিন জানান, সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন তুষারকে মারধর করছেন শম্ভু, বাপ্পা, বিদ্যুৎ ও অরবিন্দ।
অরুণ বর্মণের এ দিনের সাক্ষ্য অনুযায়ী, সে দিন শেষে শম্ভু আগ্নেয়াস্ত্র বার করে তুষারকে গুলি করেন। অরুণ সাক্ষ্যে আরও জানান, গুলি করার পরে শম্ভু বলেছিলেন যে, কেউ এই ঘটনার সাক্ষী দিলে তাঁর পরিণতিও তুষারের মতোই হবে। এর পর চার জন একটি গাড়িতে চেপে পালিয়ে যান বলে আদালতে অরুণের দাবি। ঘটনার পরে পুলিশ সেখানে এলে স্থানীয় এক জনকে দিয়ে এফআইআর লিখিয়ে তা পড়ে ও স্বাক্ষর করে পুলিশের হাতে জমা দিয়েছিলেন অরুণ। এ দিন সে কথাও তিনি সাক্ষ্যদানের সময়ে জানিয়েছেন।
এ দিনের সাক্ষ্য গ্রহণের সময় বিদ্যুৎ বাদে বাকি তিন অভিযুক্তই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অরুণবাবু ওই তিন জনকে চিনিয়েও দেন। আলিপুরদুয়ার আদালতের সরকারি আইনজীবী জহর মজুমদার জানান, অরুণবাবুর সাক্ষ্য এদিন সম্পূর্ণ হয়নি। আজ বুধবার তা সম্পন্ন হবে। তার পর অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবীরা তাঁকে জেরা করার সুযোগ পাবেন।