বৃষ্টি কমতে ধীরে ধীরে তোর্সা নদীর জল নামছে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
কোথাও জলমগ্ন হয়ে রয়েছেন মানুষ। কোথাও আবার জল নামলেও পড়তে হয়েছে ভাঙনের মুখে। কোচবিহারে বন্যা পরিস্থিতির জেরে কুড়ি হাজারের বেশি মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে হাজার খানের মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। মানসাই ও রায়ডাক নদীতে এখনও হলুদ সঙ্কেত জারি রয়েছে। দুটি নদীতেই জল বাড়ছে। তোর্সা ও কালজানি নদীর জল অবশ্য কিছুটা কমেছে। ওই দুটি নদী থেকে হলুদ সঙ্কেত তুলে নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোচবিহার পুরসভা ছুটি বাতিল করে রবিবারেও কাজ করেছে। ওই পুরসভা এলাকাতেই তিন হাজারের মতো মানুষ অসুবিধায় পড়েছেন। কোচবিহার সেচ দফতরের আধিকারিক সুমিলন ঘোষ বলেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বাসিন্দাদের জন্য ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া খাবার, ত্রিপল বিলি করা হয়েছে। সমস্ত কিছু নজরদারি করার জন্যে এ দিন পুরসভা খোলা রাখা হয়।”
বেশ কিছু দিন ধরেই কোচবিহারে বৃষ্টি হচ্ছে। তার মধ্যে গত চার-পাঁচ দিন ধরে বৃষ্টির পরিমাণ অনেকটা বেড়ে যায়। আবহাওয়া দফতর থেকে সতর্ক করা হয়, ২০ জুন পর্য়ন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তার মধ্যেই ভুটান পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে একাধিক নদীতেও জল বাড়তে থাকে। দুই মিলে শনিবার একাধিক এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কোচবিহার সদর মহকুমার তোর্সা নদী সংলগ্ন শহরের বাঁধের পাড় এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ অসুবিধায় পড়েন। এ ছাড়াও ঘুঘুমারি, সুটকাবাড়ি, পাটছড়া থেকে শুরু করে মরিচবাড়ি-খোল্টা, তুফানগঞ্জের দেওচড়াইয়ের সন্তোষপুর, চর বালাভূত, ভানুকুমারি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় লাউকুঠি, মহিষকুচি, মাথাভাঙা পূর্ব ভোগডাবরি জলমগ্ন, ছাট খাটেরবাড়ি, শীতলখুচির একাধিক গ্রাম এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বেশ কিছু অসংক্ষিত এলাকায় নদীর জল ঢুকে পড়ে। আবার বেশ কিছু জায়গায় বৃষ্টির জলে বন্যাপরিস্থিতি তৈরি হয়। বাঁধের পাড়ের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা রাতভর বাঁধের উপরেই ত্রিপল টাঙিয়ে ছিলাম। ত্রাণশিবিরে যাইনি। আসলে রাতে না ঘুমিয়ে তো বাড়ি পাহারা দিয়েছি। বাড়িটা ডুবে গেলে তো নতুন করে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে।”
কোচবিহার উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক সুকুমার রায় খোল্টা-মরিচবাড়ি, কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দেপাটছড়ায় গিয়েছিলেন। তাঁদের কথায়, “বেশ কিছু মানুষ এখনও ত্রাণপাননি। তাঁরা খুবই কষ্টে রয়েছেন। প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাচ্ছি দ্রুত তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।”