পুলিশের সঙ্গে সেবক হাউসে ঢুকছেন রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা। — নিজস্ব চিত্র।
ঘটনার চার দিন পর নিজেদের জমি ‘ফিরে’ পেলেন রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা। বৃহস্পতিবার সকালে ভক্তিনগর থানার পুলিশ জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের নিয়ে ‘সেবক হাউস’-এর দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, সকালে নতুন করে ওই জমির ‘পজেশন’ নেন সন্ন্যাসীরা। জানা গিয়েছে, এখন থেকে সেবক হাউসেই থাকবেন মিশনের সন্ন্যাসীরা।
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার পুলিশ রামকৃষ্ণ মিশনের কয়েক জন সন্ন্যাসীকে সঙ্গে নিয়ে সেবক হাউসে প্রবেশ করে। ছিলেন মিশনের আইনজীবীও। পুলিশ মূল ফটক দিয়ে ভিতরে ঢুকে প্রথমেই গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার পুলিশের উপস্থিতিতে নতুন করে সেবক হাউসের ‘পজেশন’ নেওয়া হয়। মিশনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এখন থেকে সেবক হাউসেই থাকবেন সন্ন্যাসীরা। কিছু দিন বন্ধ থাকার পর নতুন করে কাজকর্মও শুরু হবে এখান থেকে। আগামী কয়েক দিন সেবক হাউসে পুলিশি নিরাপত্তা থাকবে। সন্ন্যাসীদের সুরক্ষার কথা ভেবে সেখানে সশস্ত্র পুলিশবাহিনী মোতায়েন করেছে জেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে মিশনের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু নন্দী বলেন, ‘‘প্রশাসনের বিরুদ্ধে নই আমরা। মিশনের সাধারণ সম্পাদকও তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, প্রশাসনের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তদন্ত চলছে। আজ পজেশান নিলাম। আবার কাজকর্ম শুরু হবে। তবে আমরা আশা করব, পুনরায় শান্তি বিঘ্নিত হবে না।’’
প্রসঙ্গত, জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে সম্প্রতি শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। মিশনের বক্তব্য, শিলিগুড়ির ‘সেবক হাউস’ নামে একটি বাড়িতে মিশনের কয়েক জন সন্ন্যাসী থাকেন। শনিবার রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ ৩০-৩৫ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জোর করে সেখানে ঢুকে সন্ন্যাসীদের উপর চড়াও হন। তাঁদের শারীরিক নিগ্রহ করে বাড়ির বাইরে বার করে দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, পাঁচ সন্ন্যাসী ও বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীদের তুলে নিয়ে গিয়ে এনজেপি স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এই অভিযোগই হয়ে ওঠে রাজনীতির বিষয়। জনসভা থেকে এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিজেপির অন্য নেতারা। পাল্টা জবাব দেয় তৃণমূলও। অন্য দিকে, ঘটনার তদন্তে নেমে মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও, এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত প্রদীপ রায়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর খোঁজ চলছে। এর মধ্যেই আবার বাসস্থান ফিরে পেলেন মিশনের সন্ন্যাসীরা।