বিক্রি হচ্ছে বাঘা যতীন ক্লাবের সবুজ-মেরুন জার্সি। — বিশ্বরূপ বসাক
কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে আবার সবুজ-মেরুন বনাম লাল-হলুদ। কিন্তু সবুজ মেরুন বলতেই যা মনে আসে, এ সেই মোহনবাগান ক্লাব নয়। ভূমিপুত্র বাঘা যতীন অ্যাথলেটিক ক্লাব। তবে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে, আড্ডার ঠেকে তর্কের মধ্যে বোঝা যাচ্ছে না কোনও স্থানীয় ক্লাবের সঙ্গে খেলতে আসছে ইস্টবেঙ্গল। যেন সেই বড় ম্যাচেরই চেনা মেজাজ! দিন যত এগিয়ে আসছে পারদ চড়ছে উত্তেজনার, তর্কের-ও।
হাকিমপাড়ার উদয়ন সমিতির মাঠ
কাকে সমর্থন করবেন? প্রশ্ন শুনেই পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিক্রম দাস উত্তর দিনেন, ‘কাকে আবার। আমরা বরাবর লাল-হলুদের সমর্থক। অন্য কোনও দলকে সমর্থনের প্রশ্নই নেই।’ পাশ থেকে কৌস্তভ শীলের তির্যক মন্তব্য, ‘ঘরের ক্লাবকে ছেড়ে কলকাতার ক্লাবকে! একেই বলে ঘরের শত্রু বিভীষণ।’ তাঁর কথায়, তাঁরা মোহন সমর্থক। ঘরের ক্লাব বাঘা যতীনকেই সমর্থন করছেন। আদিত্য সরকার গড়া চড়িয়ে কৌস্তব, পৃথ্বীশ দাসদের উদ্দেশ্যে বলে, ‘আমরা ইলিশ। তোমরা চিংড়ি। ইলিশের কদরই আলাদা সে তো জানো।’ কথা শেষ না হোতেই রাজ পাসোয়ান, দীপঙ্কর সাহাদের একযোগে বলে ওঠে, ‘‘ইলিশ সামলে খেও ভাই। গলায় কাঁটা লাগবে।’’ সবুজমেরুন সমর্খক কৌস্তভ একধাপ এগিয়ে বলেন, ‘আইএফএ শিল্প কে প্রথম জিতেছে বল তো? আমরাই।’’ সঙ্গে সঙ্গে আদিত্য সরকারের কটাক্ষ, ও সব তো অতীত। এখন কী হতে যাচ্ছে ভাব। কাঞ্চনজঙ্ঘা বরাবর ইস্টবেঙ্গলের পয়া। এখানে আমরাই জিতি, আমরা জিতব।’’ মোহন সমর্থক রাজ সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠেন, ‘‘আমরা বলি না, করি। গোটা দল নিয়ে এলেও ঘরের মাঠে হারবে ইস্টবেঙ্গলই।’’
শিলিগুড়ি কলেজ
মাঠে ম্যাচ নিয়েই আলোচনা করছিলেন অমিত সরকার, মনীষা চৌধুরীরা মোহনবাগান সমর্থক। রাজা ভৌমিক, প্রিয়াঙ্কারা লাল হলুদের কট্টর ভক্ত। অমিত, মনীষারা বলেন, ‘বাঘাযতীন ক্লাব মোহনবাগানের অংশ বলেই আমরা মনে করি। কেন না ক্লাবের জার্সি, পতাকার রঙ তো আমাদের প্রিয় দলেরই। আমরা তাই মোহনবাগানকেই সমর্থন করছি।’ প্রিয়ঙ্কাদের কথায়, কাঞ্চনজঙ্ঘার গ্যালারি ৩৪ হাজারের মধ্যে তো ৩০ হাজার লাল-হলুদই ভরে থাকে। তোদের আওয়াজ তো শোনাই যাবে না। রাজা সমর্থন করে বলে, ‘শিলিগুড়িকে ইস্টবেঙ্গলের সেকেন্ড হোম বলে।’ অমিতের মতো সবুজ মেরুন সমর্থক পড়ুয়াদের দাবি, ‘‘আরে আমাদের তো দুই হাজার বাঘা যতীন ক্লাবেরই সদস্য রয়েছে। ভিআইপি গ্যালারি আমাদেরই থাকবে।’’