মোহন শর্মা। নিজস্ব চিত্র
সংরক্ষণের গেরোয় সভাধিপতি হতে না পারা তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা কি এবার আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের মাথায় বসতে চলেছেন? জেলা তৃণমূলের অন্দরে খবর অন্তত তেমনটাই৷
তৃণমূল সূত্রের খবর, সভাধিপতি হতে না পারলেও, নতুন পদ তৈরি করে মোহনবাবুকে জেলা পরিষদের মেন্টরের দায়িত্ব দিতে পারে রাজ্য সরকার৷ এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তি জারি না হলেও সরকারি সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে৷ মোহনবাবু ঘনিষ্ঠরা এই পদকে সভাধিপতির সমতুল্য বললেও, দলেরই একাংশের দাবি, জেলা পরিষদের মেন্টরের অর্থ সভাধিপতির চেয়েও বড় পদ৷ যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা৷
২০১৩ সালে অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার অংশ হিসাবে আলিপুরদুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল৷ ২০১৪ সালে আলিপুরদুয়ার নতুন জেলার স্বীকৃতি পাওয়ার পর আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল৷ সভাধিপতি হন দলের বর্তমান জেলা সভাপতি মোহন শর্মা৷
কিন্তু এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদটি সংরক্ষিত ছিল৷ এই অবস্থায় প্রথম দিকে নির্বাচনে দাঁড়াতে চাননি মোহনবাবু৷ নির্বাচনে জিতলে তাকে সহকারি সভাধিপতি করা হবে বলে, দলের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে অপেক্ষাকৃত নিচু পদ হওয়ায় সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন তিনি৷
শেষ পর্যন্ত অবশ্য দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে নির্বাচনে দাঁড়াতে রাজি হন৷ নির্বাচনে জিতে এই মুহূর্তে জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্য হিসাবেই রয়ে গিয়েছেন তিনি৷ যদিও দলের জেলা সভাপতি হিসাবে থাকার জেরে জেলা পরিষদের রাশ এখনও তাঁর হাতেই রয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর৷ কিন্তু সরকারিভাবে তাঁর হাতে যাতে সেই রাশ থাকে, সে জন্য তাঁকে একটি পদে বসাতে চাইছিলেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ৷ তাঁদের কথায়, সরকার এখন নতুন পদ তৈরি করে মোহনবাবুকে সেখানে বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, সেই সমস্যা আর থাকবে না৷
তৃণমূলের এক রাজ্য নেতা বলেন, “শুধু আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদেই নয়, রাজ্যের সব জেলা পরিষদেই একটি মেন্টর ও একটি কো-মেন্টরের পদ তৈরি করা হচ্ছে৷ আলিপুরদুয়ারে মেন্টরের পদে মোহনবাবুকে বসানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ তবে এই পদ দু’টি তৈরি নিয়ে সিদ্ধান্ত হলেও, এখনও পর্যন্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি৷”
মোহনবাবু ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতাদের একাংশের কথায়, জেলা পরিষদের নতুন এই পদটি সভাধিপতির সমতুল্য৷ কিন্তু দলেরই নেতাদের একাংশের কথায়, মোহনবাবুকে মেন্টর হিসাবে বসানো হলে, এবার থেকে সরকারিভাবে জেলা পরিষদের যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যাবতীয় রাশ তাঁর হাতে থাকবে৷
বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু কিছু বলতে চাইছেন না তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতারা৷ মোহনবাবুকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমি এই ব্যাপারে কোনও চিঠি পাইনি৷ তাই কোনও মন্তব্য করব না৷” আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি শীলা দাস সরকার বলেন, “এই মুহূর্তে আমি জেলার বাইরে রয়েছি৷ বিষয়টি ঠিক জানি না৷”