মোহন ভাগবত।
কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে বিজেপি। ভাবমূর্তি ফেরাতে এ বার ময়দানে নেমেছে সঙ্ঘ পরিবার। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যরা এই সিদ্ধান্তকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদার মনোভাবের পরিচয় বলেই প্রচার করছেন। এমনই শাসক সর্বত্র প্রয়োজন বলেও প্রচার করছেন তাঁরা। এমন পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই উত্তরবঙ্গে আসতে পারেন সঙ্ঘ পরিচালক মোহন ভাগবত। এর আগে পশ্চিমবঙ্গে সফরে কলকাতায় এলেও উত্তরবঙ্গে পা রাখেননি ভাগবত। এ বারেই প্রথম তিনি উত্তরবঙ্গে আসতে চলেছেন। বর্তমানে উত্তরবঙ্গে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবাররের সংগঠন যথেষ্ট মজবুত। লোকসভার পরে বিধানসভাতেও বিজেপি ভাল ফল করেছেন। এমন অবস্থায় ভাগবতের সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের কোচবিহার জেলা সম্পর্ক প্রমুখ রঞ্জন সরকার জানান, ফেব্রুয়ারিতে মোহন ভাগবতের সফর নিয়ে তাঁরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। তিনি বলেন, “কৃষি আইন নিয়ে একটা আন্দোলন চলছিল। সরকার জনগণের স্বার্থে। কৃষি প্রধান এলাকার থেকেই ওই প্রতিবাদ উঠেছিল। আমরা মনে সব কিছুর উৎস জনগণ। সংসদে বিল পাশ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু মানুষ তা চাইছেন না। সেই অভিমতকে গুরুত্ব দিয়ে পৃথিবীতে নজির তৈরি করলেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যান্য সরকার স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে চলে আমরা বহু জায়গায় দেখেছি। এই সরকার তা নয়।” কৃষি আইন নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই তুঙ্গে উঠেছিল। বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের একাধিক সংগঠন কৃষকদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে কৃষি আইনের স্বপক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছে। আবার উল্টোদিকে তৃণমূল-বামেরা মাঠে নেমে কৃষি আইনের বিপক্ষে সওয়াল করেছে। কোচবিহার জেলাতেও সেই লড়াইয়ের ছবি দেখা গিয়েছে।
স্বাভাবিক ভাবেই ওই আইন প্রত্যাহার নিয়েও দু’পক্ষের মধ্যে তরজা সামনে এসেছে। বিজেপি’র বিভিন্ন নেতাকে যদিও ওই বিষয়ে বিভিন্ন রকম কথা বলতে শোনা গিয়েছে। কেউ বলেছেন, ওই আইন ছোট কৃষকদের পক্ষে ছিল। পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা তাতে লাভবান হতেন। কেউ কেউ দাবি করেছেন, আইন প্রত্যাহারের ফলে কৃষকদের ক্ষতি হল।। বিরোধীরা অবশ্য দাবি করেছে, আন্দোলনের চাপে আইন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছে মোদী সরকার। তার আগে এই দীর্ঘ দিনের আন্দোলনে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যেই সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যরা ময়দানে নেমেছেন। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, “সরকার যে মনোভাব দেখিয়েছে তা অনেক বড়।”