রাখিতে মন্ত্রীরা। নিজস্ব চিত্র
থরে থরে সাজানো বাহারি রাখির পসরা। অন্যান্য ধরণের পাশেই চোখে পড়বে মোদী-মমতার ছবি দেওয়া রাখিও। কোন রাখির চাহিদা বেশি? ইংরেজবাজার পুরভবনের সামনেই রাখির বিক্রি করছিলেন মানু হোসেন, বললেন, ‘‘দুই নেতা-নেত্রীর ছবি দেওয়া রাখির জোর টক্কর চলছে। টক্কর যত বাড়বে, ততই লক্ষ্মীলাভ হবে।’’
শুধু ইংরেজবাজার পুরভবনের সামনেই নয়, শহর জুড়েই দেদার বিকোচ্ছে মোদী-মমতার ছবি দেওয়া রাখি। রাজনৈতিক জগতের দুই হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীদের ছবি দেওয়া হরেক রকমের রাখিতে এ বার বাজার ছেয়েছে। মোদী-মমতার ছবি দেওয়া রিস্ট ব্যান্ডের আদলে তৈরি রাখির দাম মাত্র পাঁচ টাকা। একই সঙ্গে সুসজ্জিত নক্সা যুক্ত রাখির দাম আবার ২৫ টাকা। ফলে রকমারি রাখির মতোই, দামও হরেক রকমের রয়েছে।
কিন্তু এই ছবি দেওয়া রাখি বিক্রির কারণ কী? চিত্তরঞ্জন পুরবাজারের রাখি বিক্রেতা সুনীল সাহা বলেন, ‘‘রাস্তায় অনেক সময় আমরা দেখি রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা দলীয় কর্মীদের হাতে রাখি পরান। তাই দলগুলির প্রিয় নেতা-নেত্রীর ছবি যুক্ত রাখি থাকলে চাহিদা আরও বাড়বে। এমনই ভাবনা থেকে এ বারে এই রাখি মজুত করেছি।’’ আর এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘শিশুদের আকৃষ্ট করতে ছোটা ভীম, ডোরেমনের মতো চরিত্রগুলি রাখিতে ব্যবহার করা হত। এ বার মালদহের বাজারে রাখিতে নতুন সংযোজন মোদী-মমতার ছবি দেওয়া রাখি।’’ মাস দু’য়েক আগেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে। তার আগে, প্রচার সামগ্রী হিসেবে, বাজারে বিক্রি হয়েছে রাজনৈতিক দলের প্রতীকচিহ্ন যুক্ত টি-শার্ট, ছাতা, টুপি, শাড়ি। পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে মালদহে কংগ্রেস, বামেদের পেছনে ফেলে প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে তৃণমূল। বিরোধী আসন পেয়েছে বিজেপি। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, লোকসভা নির্বাচনেও জেলাতে প্রধান লড়াই হবে তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যেই। তাই দুই দলের নেতা-নেত্রীর ছবি সহ রাখি বিক্রিকে শক্তি যাচাইয়ের মঞ্চ বলে মনে করছেন অনেকেই।
তৃণমূলের দায়িপ্তপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, ‘‘জেলায় নেত্রীর জনপ্রিয়তা কতটা, তা পঞ্চায়েতের ফলাফলেই স্পষ্ট। ফলে বাজারেও টক্কর দেবে দিদির ছবি দেওয়া রাখিই।’’ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভোটের মতো রাখিতেও জবাব দেবে মানুষই।’’ যদিও রাজনৈতিক উত্তাপে রাখি বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ী মহলে।