শেষযাত্রায় মৃত গোলাপ আলির দেহ কাঁধে নীহাররঞ্জন।
ভিন্ রাজ্যে মৃত্যু, কাঁধ বিধায়কের
বাপি মজুমদার
চাঁচল
ট্রাক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ট্রাক মালিক ও খালাসির। ভিন্ রাজ্যে দুর্ঘটনার পর দেহ ফিরতেই পরিবারের পাশাপাশি শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। চারদিকে কান্নার শব্দ। পুজোর মুখে সেই শোক ভাগ করে নিতে সব কাজ ফেলে এলাকায় হাজির হয়ে শববাহী খাট কাঁধে তুলে নিলেন বিধায়ক। কবরে মাটি দিলেন। শেষকৃত্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকলেন। শোকভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি একইসঙ্গে বার্তা দিলেন সম্প্রীতিরও। রবিবার এমনই ছবি দেখল মালদহের চাঁচল। দুর্ঘটনায় মৃতরা হলেন রেজাউল হক (৩২) ও গোলাপ আলি (১৮)। ট্রাক মালিক রেজাউল কুশমাই ও গোলাপ দিঘাবসতপুর এলাকার।
চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, "চারদিকে পুজোর আনন্দঘন পরিবেশ। কিন্তু দুটি এলাকায় শুধুই শোক। ওদের ফেরাতে পারব না। কিন্তু শোক কিছুটা হলেও ভাগ করে নিতেই ওদের পাশে দাঁড়িয়েছি।"
সপ্তাহখানেক আগে আসানসোল থেকে ট্রাকে লোহার রড নিয়ে নাগাল্যান্ড রওয়ানা হয়েছিলেন মালিক রেজাউল। শুক্রবার মেঘালয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাক খাদে পড়লে রেজাউল ও খালাসি গোলাপ মারা যান। লাফিয়ে প্রাণে বাঁচেন চালক। এ দিন দুজনেরই কফিনবন্দি দেহ এলাকায় পৌঁছয়। জানতে পেরেই অভাবি গোলাপের বাড়িতে ছুটে যান বিধায়ক। তদারকি করার পাশাপাশি শববাহী খাটিয়া কাঁধে নিয়ে কবরস্থানে যান। সেখানে শেষকৃত্যের পর রেজাউলের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন বিধায়ক। মৃত গোলাপের বাবা দুলাল আলি বলেন, "অভাবের তাড়নায় ছেলেটা পড়শোনা ছেড়ে খালাসির কাজ নেয়। বলেছিল পুজোর আগেই ফিরবে। এ ভাবে যে ফিরবে ভাবিনি।" রেজাউলের বাবা, মা ছাড়াও স্ত্রী ও দুই নাবালক সন্তান রয়েছে। ঋণ নিয়ে ট্রাক কিনেছিলেন তিনি। অকস্মাৎ মৃত্যুতে অথৈ জলে পড়েছে দুটি পরিবারই।
বিধায়ক এ দিন বলেন, "ওরা যাতে সরকারি চাকরি পায় তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।"