নজরে: চা বাগানের শ্রমিকেরা রেশন কার্ড পাচ্ছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখতে আধিকারিকদের পাঠাচ্ছে শাসক দল। ফাইল চিত্র
চা বলয়ে সকলে সরকারি রেশন পাচ্ছেন কিনা, তা দেখতে শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি যেতে আধিকারিকদের নির্দেশ দিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
চা শ্রমিক পরিবারগুলির সকলের কাছে ডিজিটাল রেশন কার্ড রয়েছে কিনা সরকারি ভাবে তাই দেখতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। কত পরিবার এবং কত কার্ড তা খতিয়ে দেখবেন আধিকারিকেরা। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, খাদ্য দফতরের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে রাজ্যের শাসক দলের চা বলয়ের মন জয়ের চেষ্টা। যে কোনও সমীক্ষা করতেই চা শ্রমিকদের মহল্লায় সরকারি আধিকারিকেরা পৌঁছলে তার প্রভাব যথেষ্টই পড়বে বলে মনে করেন তৃণমূল নেতাদের বড় অংশ।
গত শুক্রবারই আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা-সহ দলের এক প্রতিনিধি দল বন্ধ চা বাগান খোলার দাবিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করেন। তারপর কেন্দ্রীয় সরকার বৈঠক ডাকার কথা ঘোষণাও করেন। সেই কথা ফলাও করে প্রচার করেন বিজেপি নেতারা। সেই ঘোষণার পরে রাত পোহাতে না পোহাতেই চা নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন রাজ্যের তৃণমূলের মন্ত্রীরাও।
শনিবার উত্তরকন্যায় বৈঠক করতে এসেছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। তিনি জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের ১০৭টি চা বাগানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে রেশন বিলি করা হবে। চা বলয়ে ১২৬টি ন্যায্য মূল্যের রেশন দোকান খোলা হয়েছে। আরও ৯৬টি রেশন দোকান খোলা হবে বলে মন্ত্রী দাবি করেছেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রতিটি চা শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের মুখে রাজ্য সরকার খাদ্য তুলে দিচ্ছে। চা শ্রমিেকরা ২ টাকা কেজি দরে মাসে ৩৫ কেজি চাল পেয়ে থাকেন। আধিকারিকদের বলেছি চা শ্রমিকদের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে দেখতে, সকলে রেশন পাচ্ছে কিনা।”
সরকারি সূত্রের খবর, এই নির্দেশের প্রেক্ষিত খানিকটা ভিন্ন ছিল। ডিজিটাল রেশন কার্ড পেতে একই পরিবার ভেঙে একাধিক দেখানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ। চা বলয়েও এই প্রবণতা শুরু হয়। সেই কথা মন্ত্রীকে জানাতেই সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এর ফলে সমীক্ষায় ভুলভ্রান্তি দূর হবে। কিন্তু শ্রমিকদের বাড়িতে একজন করে সরকারি আধিকারিকও পৌঁছবেন। মন্ত্রীর কথায়, “সকলেই চাল পাচ্ছেন কিনা তাও আরেক বার পরখ হয়ে যাবে।”
বন্ধ বাগানেও চা শ্রমিকদের রেশন দিচ্ছে রাজ্য। চা বলয়ে বিশেষ জোর দেওয়ার নির্দেশে কতটা ফল মিলবে তা পরের কথা। তবে রাজ্য যে চা শ্রমিকদের পাশে রয়েছে, সেই বার্তা দেওয়া যাবে বলে মনে করছেন অনেকে।
এর আগেও পাহাড়ে চা বলয়ের মন জিততে রেশন বিলিকে হাতিয়ার করেছিল রাজ্য। পাহাড়ে বন্ধ চলার সময় পুলিশ পাহারায় প্রচুর রেশন সামগ্রী উঠিয়ে বিলি করা হয়েছিল। ডুয়ার্স-তরাইয়ের চা বলয়ের মন ফিরে পেতে আপাতত সব শ্রমিক পরিবার যাতে পর্যাপ্ত রেশন পায়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার।