রায়গঞ্জ কুলিকে পরিযায়ী পাখিদের আগমন। ছবি: মেহেদি হেদায়েতুল্লা।
দেরিতে হলেও পরিযায়ী পাখি আসায় স্বস্তি ফিরল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষিনিবাসে। প্রতি বছর মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুন মাসের মধ্যে কুলিক পক্ষিনিবাসে আসতে শুরু করে পরিযায়ী পাখির দল। এ বছর ওই সময়ে পাখি আসা শুরু না হওয়ায়, পরিবেশপ্রেমীরা চিন্তায় ছিলেন। তবে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ফের ছন্দে ফিরেছে কুলিক। পরিযায়ী পাখিদের কলতানে মুখরিত হয়ে উঠেছে কুলিক পক্ষিনিবাস।
কুলিক পক্ষিনিবাস এশিয়ার বৃহত্তম পাখিরালয় বলে পরিচিত। রায়গঞ্জ শহরের কুলিক নদীর ধারে, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ৬০০ একর বনাঞ্চল নিয়ে গঠিত এই পক্ষিনিবাসে প্রতি বছর মে মাসের শেষ থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত হাজার হাজার মাইল দূরের শীতপ্রধান দেশ থেকে ছুটে আসে পরিযায়ী পাখির দল। ‘ওপেন বিল স্টর্ক’, ‘ইগ্রেট’, ‘কর্মোর্যান্ট’, ‘নাইট হেরন’— মূলত এই চার প্রজাতির পাখি এই পক্ষিনিবাসে এসে সঙ্গী নির্বাচন করে বাসা বাঁধে। প্রজননের মাধ্যমে ডিম ফুটিয়ে শাবকের জন্ম দেয়। তাদের উড়তে শেখানো, বড় করে তোলা পর্যন্ত থেকে, শীতের আগে ফিরে যায়।
বন দফতরের কর্তাদের দাবি, এ বছরে মে-জুন মাসে তাপপ্রবাহ ছিল। তার প্রভাব পড়ে পশু-পাখির ক্ষেত্রেও। বৃষ্টি হওয়ায় পরিযায়ী পাখির দল আসা শুরু হয়েছে। বন দফতরের এডিফও (রায়গঞ্জ ডিভিশন) সৌগত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পরিযায়ী পাখির দল এ বার নির্দিষ্ট সময়ে আসেনি। ফি বছর প্রাক্-বর্ষায় পরিযায়ী পাখির দল ভিড় জমাত। এ বার অন্য রকম ছবি। তবে বৃষ্টি হওয়ায় পাখিরা চলে এসেছে। আমাদের ধারণা, পাখিরা তাপমাত্রা বেশি থাকায় অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিল। বৃষ্টি হয়ে তাপমাত্রা কমায় পাখির দল এসেছে। ঘুরতে এসে স্বস্তি মিলছে পর্যটকদেরও।’’ বন দফতরের দাবি, গত বছর কুলিকে প্রায় এক লক্ষ পরিযায়ী পাখি এসেছিল। এ বছরও প্রচুর পাখি এসেছে।