Migrant Worker

কোয়রান্টিনে শ্রমিকের মৃত্যু, ক্ষোভ

পুলিশ ও মৃত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬ দিন আগে মহারাষ্ট্রের পুনে থেকে ফিরে আসেন দিলীপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ০৭:৫৫
Share:

মর্গের বাইরে পরিজনদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র

করোনা থেকে বাঁচার তাগিদে সুদূর মহারাষ্ট্র থেকে বহু কষ্ট করে ফিরে শেষে সাপের কামড়ে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। শনিবার রাত ১২টা নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানার পাগলিগঞ্জ এলাকার কোয়রান্টিন কেন্দ্রের ঘটনা। মৃত পরিযায়ী শ্রমিক দিলীপ পণ্ডিত (৬০) পাগলিগঞ্জ এলাকারই বাসিন্দা। ওই শ্রমিকের মৃত্যুতে ব্লক প্রশাসনের বিরুদ্ধে চরম অবহেলার অভিযোগ তুলে আত্মীয়রা সরব হয়েছেন।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, চারদিকে ঝোপঝাড় ও আবর্জনায় ঘেরা জেলাপরিষদের পরিত্যক্ত মার্কেট কমপ্লেক্সের কোয়রান্টিনে কাটানো দিলীপবাবুদের খোঁজ নিতে প্রশাসনের কেউ আসেননি। বাড়ি থেকে তাঁদের খাবার ও পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছিল। পাশের আত্রেয়ী নদীতে গিয়ে তাঁরা স্নান ও প্রাতঃকৃত্য সারতেন।

পুলিশ ও মৃত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬ দিন আগে মহারাষ্ট্রের পুনে থেকে ফিরে আসেন দিলীপ। সেখানে তিনি নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। তাঁর সঙ্গে পাশের গ্রাম পোল্লাপাড়ার সুভাস মালি নামে আর এক শ্রমিকও ফিরে আসেন। এর পরে দু’জনেরই স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয় খাসপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। লালারসের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। চিকিৎসকেরা তাঁদের হোম কোয়রান্টিনের নির্দেশ দেন। এর পরে এলাকার লোকজন তাঁদের গ্রামে ঢুকতে আপত্তি জানানোয় ওই দু’জন পাগলিগঞ্জে অবস্থিত জেলা পরিষদের পরিত্যক্ত মার্কেট কমপ্লেক্সে কোয়রান্টিনে থাকতে শুরু করেন।

Advertisement

শনিবার মধ্যরাতে হঠাৎ দিলীপকে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপে কামড়ায়। পরিবারের লোকেরা জানান, মধ্যরাতে তাঁর জ্বালা-যন্ত্রণা শুরু হলে সঙ্গী সুভাষ কাছেই দিলীপের বাড়িতে ছুটে গিয়ে খবর দেন। বাড়ির লোকেরা ছুটে আসেন। প্রাথমিক শুশ্রূষা করার আগেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন সকালে বালুরঘাট থানার পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁর দেহ বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরিবারের লোকেরা জানান, সাপের কামড়েই তাঁর মৃত্যু বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

এ দিন বিকেলে দেহটি ময়নাতদন্ত করার পরে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও সাপের কামড়ে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

এ দিকে মৃত ওই শ্রমিকের লালারসের নমুনার রিপোর্ট এখনও আসেনি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ব্লক প্রশাসনের চরম অবহেলার কারণে জঙ্গলে ঘেরা ওই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোয়রান্টিনে থাকতে গিয়ে ওই শ্রমিককে সাপের কামড়ে অকালে প্রাণ হারাতে হল বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জানতে বালুরঘাটের বিডিও অনুজ সিকদারকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক নিখিল নির্মল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement