রংবেরঙ: গজলডোবায় পরিযায়ী পাখির দল। সেই দলের মধ্যে রয়েছে লুপ্তপ্রায় পাখিরাও। ছবি: সন্দীপ পাল।
শীত পড়তেই একাধিক রংবেরঙের পরিযায়ীদের দেখা মিলতে শুরু করেছে শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ফুলবাড়ি ব্যারাজ ও গজলডোবায়। এর মধ্যে সাইবেরিয়া থেকে আসা ২০-২২টি ইয়েলো ব্রেস্টেড বান্টিং রয়েছে। সারা বিশ্বে এরা একেবারেই লুপ্তপ্রায় হিসেবে চিহ্নিত। মাত্র কয়েক হাজারের কাছে এসে ঠেকেছে এদের সংখ্যা। এই অঞ্চলে এদের তো বটেই, অন্য পরিযায়ীদের নিয়ে সরব হলেন পরিবেশপ্রেমীরা৷
মঙ্গলবার দুপুরে ফুলবাড়ি ব্যারাজ সংলগ্ন এলাকায় পরিবেশপ্রেমী সংগঠন অপটোপিকের তরফে একটি আলোচনাসভা হয়েছে। সেখান থেকে শীতের এই ক’মাস পরিযায়ীদের সংরক্ষণ, নিরিবিলি পরিবেশ দেওয়ার দাবিও তোলা হল। পাখি পর্যটনের কেন্দ্র হিসেবে গজলডোবাকে গড়ে তোলা নিয়েও আলোচনা করা হল।
বন দফতরের সুকনার এডিএফও বিমল দেবনাথ ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসন, পঞ্চায়েতের আধিকারিকেরা ছিলেন। এডিএফও বলেন, ‘‘আমরা জঙ্গলের ভিতরে বন্যজন্তুদের রক্ষার কাজই মূলত করে থাকি। বাইরের এলাকাতেও এমন পাখি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে পরিবেশপ্রেমীদের এগিয়ে আসতে বলি আমরা। এলাকার সংরক্ষণ অবশ্যই প্রয়োজন। আমাদের কাছে আবেদন এলে অবশ্যই তা দেখা হবে।’’
আর একটি পরিবেশপ্রেমী সংগঠনটির সভাপতি দীপজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শীতের শুরুতে সচেতনতা বাড়াতে আমরা এলাকায় আসি। স্থানীয়দের সাহায্যে পিকনিক বন্ধ হয়েছে। শিকার নেই বললেও চলে। এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে। এটাই সবাই মিলে দেখতে হবে।’’ তিনি জানান, ফুলবাড়ি ব্যারেজ লাগোয়া গ্রামে জঙ্গল কেটে, পুড়িয়ে চাষের জমি বাড়ানো, মহানন্দা নদীর জলে রাসয়নিক মেশায় গুল্ম, হোগলার জঙ্গল কাটায় পাখিদের সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে ইয়েলো ব্রেস্টেড বান্টিং আর আসবে কি না বোঝা যাচ্ছে না। এটা রোখাও জরুরি বলে জানান তিনি।
পরিবেশপ্রেমীরা জানান, ফুলবাড়ি আর গজলডোবা মিলিয়ে পরিযায়ীদের মধ্যে ইয়েলো ব্রেস্টেড বান্টিং অন্যতম। জাপান, রাশিয়া, সাইবেরিয়া থেকে এই ছোট্ট পাখিরা প্রচি বছর এই অঞ্চলে আসছে। বিশ্বে হাজার দুয়েকের মধ্যে ফুলবাড়িতে ২০ থেকে ২২টা পাখিকে দেখা যায়। বিরল হতে বসা এই পাখির টানে বহু ফটোগ্রাফার, পাখিপ্রেমীরা এলাকায় আসেন। গত কয়েক বছরে টানা পিকনিক, সাউন্ডবক্সের ব্যবহার, শিকার, মাছ ধরার জাল ফেলায় পাখি আসা কমেছিল। আবার এসব বন্ধ হওয়ায় পাখিরা ফেরা শুরু করেছে।