গোপালি দাস। নিজস্ব চিত্র
মিড-ডে মিলের রান্না চলছিল। সেই সময় প্রেসার কুকারের চেক ভাল্ভ ফেটে জখম হলেন এক রন্ধনকর্মী। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জের স্কুল রোড এলাকার রায়গঞ্জ জিএসএফপি প্রাথমিক স্কুলে। রায়গঞ্জের বন্দর এলাকার বাসিন্দা গোপালি দাস নামে ওই রন্ধনকর্মীকে জখম অবস্থায় রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গরম ডাল ও গরম জলীয় বাষ্পে তাঁর দুই হাত, মুখ-সহ শরীরের উপরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গিয়েছে। ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় অভিভাবকদের মধ্যে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই কর্মী প্রেসার কুকারে ডাল সেদ্ধ করছিলেন। গরম বাষ্প বার করার জন্য একটি হাতা দিয়ে কুকারের ভাল্ভের উপরের অংশে আঘাত করেন। তাতেই ভাল্ভটি ফেটে যায়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মঞ্জু কুণ্ডু কর্মকারের দাবি, অসাবধানতাবশত ওই ঘটনাটি ঘটেছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রুখতে রন্ধনকর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে।
ওই স্কুলে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা ও বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত দুই পর্যায়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চলে। সকালে ৩০০ জন এবং দুপুরে প্রায় ৪০০ জন পড়ুয়া। দুই পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা ১২ জন। স্কুল সূত্রের খবর, এ দিন ওই ঘটনার পরেই আতঙ্ক ছড়ায় পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে। পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলে গ্যাস সিলিন্ডার ও প্রেসার কুকার বিস্ফোরণ হয়েছে বলে গুজব রটে। অভিভাবকদের একাংশ তড়িঘড়ি স্কুলে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করে পড়ুয়া ও অভিভাবকদেরে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করে।
গোপালির দাবি, ‘‘কুকারে দীর্ঘক্ষণ ডাল সেদ্ধ হওয়ার পরেও সেটিতে সিটি পড়ছিল না। তাই হাতা দিয়ে সিটির উপরে একটু চাপ দিতে চেক ভাল্ভ ফেটে আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে গরম ডাল ও বাষ্প পড়ে।’’
অভিভাবকদের অভিযোগ, ওই স্কুলে মিড-ডে মিলের জন্য কোনও রান্নাঘর নেই। ফলে প্রতিদিন স্কুলের বারান্দায় দু’টি গ্যাস সিলিন্ডার জ্বালিয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিড-ডে মিল রান্না হয়। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও দিন গ্যাস সিলিন্ডার বা প্রেসার কুকার ফেটে কিংবা অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, মিড-ডে মিলের করার জন্য রান্নাঘর না থাকার সমস্যার কথা দীর্ঘদিন আগেই প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারি কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
উত্তর দিনাজপুরের জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিতকুমার মাইতির দাবি, তিনি খুব শীঘ্রই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন।