প্রতীকী ছবি
বিশেষ ট্রেন চালু হতেই এ বার শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার পালা। আজ, রবিবার থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকেরা আলিপুরদুয়ারে ফিরতে শুরু করার কথা। কিন্তু জেলায় কত সংখ্যায় শ্রমিক ফিরবেন ও তাঁদের জন্য কত কোয়রান্টিন সেন্টার তৈরি রাখতে হবে, সেই হিসাব কষতেই এখন কার্যত নাজেহাল অবস্থা প্রশাসনের কর্তাদের একটা বড় অংশের।
যদিও প্রকাশ্যে অবশ্য তাঁরা দাবি করছেন, জেলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।
লকডাউন শুরু হতেই ভিন্ রাজ্যে কাজের সন্ধানে যাওয়া আলিপুরদুয়ার জেলার বহু পরিযায়ী শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে কেউ কেউ লকডাউন শুরুর আগেই জেলায় নিজের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেন। আবার লকডাউনের মধ্যেও নিজেদের উদ্যোগে কিছু ব্যবস্থা করে অনেকে জেলায় ফেরেন।
কিন্তু জেলা থেকে কাজের সন্ধানে ভিন্ রাজ্যে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের একটা বড় অংশই এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আটকে রয়েছেন বলে ধারণা আলিপুরদুয়ার প্রশাসনের। বিশেষ ট্রেন চালু হয়ে যাওয়ায় আজ, রবিবার থেকে তাঁরা জেলায় ফিরতে শুরু করবেন বলে নিশ্চিত তাঁরা। আর সেটাই সবচেয়ে বড় চিন্তা বিভিন্ন মহলের।
খোদ প্রশাসন সূত্রের খবর, রবিবার থেকে জেলায় যে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যাবে সে বিষয়ে শীর্ষ কর্তারা নিশ্চিত হলেও, আগামী কয়েকদিনে সেই সংখ্যাটা কত হবে সেটা ভেবেই নাজেহাল অবস্থা তাঁদের অনেকের।
একই ভাবে জেলায় ফেরার পরে তাঁদের জন্য কোথায় কোথায় কত কোয়রান্টিন সেন্টারের ব্যবস্থা করতে হবে কিংবা সেই ব্যবস্থা আদৌ কী ভাবে সম্ভব হবে তা-ও বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই।
সূত্রের খবর, শনিবার বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক কর্তারা একটি বৈঠক করেন। বৈঠকে জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা ছাড়াও ভূমি ও ভূমি সংস্কার এবং উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দফতর রাজ্য উপদেষ্টা মণ্ডলীর চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী ও আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। মূলত আগামী কয়েক দিনে জেলায় কত পরিযায়ী শ্রমিক ফিরতে পারেন তা নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়।
প্রশাসনের তরফে দিন কয়েক আগেই ভিন্ রাজ্যে আটকে থাকা আলিপুরদুয়ার জেলার প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিকের একটি তালিকা রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনেরই কোনও কোনও মহলের মতে, আদতে সেই সংখ্যাটা আরও কয়েকগুণ হবে। এই অবস্থায় জেলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখতে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে অন্তত একটি করে কোয়রান্টিন সেন্টার গড়াতে উদ্যোগী হয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি ব্লকের অনেক গ্রাম পঞ্চায়েতেই এখনও সেই কাজ বাকি রয়েছে।
তবে জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা বলেন, ‘‘জেলায় কারা ফিরবেন সেই তালিকা আগেই আমাদের কাছে পৌঁছে যাবে। তাঁদের রাখার জন্যও পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও আমাদের কাছে রয়েছে।’’