বৈঠক পিছিয়ে গেলেও টেলিফোনে কথা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী এবং জিটিয়ে প্রধানের।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) প্রধান অনীত থাপার বৈঠকের কথা থাকলেও, মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম সফরের ব্যস্ততার জন্য তা হল না। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে অনীতের। সূত্রের খবর, জেলা সফরের পরে, কলকাতায় জিটিএ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করতে পারেন। ফেব্রুয়ারির ৩ বা ৪ তারিখ ওই বৈঠক হতে পারে। তার আগে বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী, সচিবদের সঙ্গে কথা বলে জরুরি কিছু আলোচনা সেরে রাখতে পারেন জিটিএ প্রতিনিধিরা। অনীত এ দিন বলেন, ‘‘কলকাতায় জিটিএ-র কাজে এসেছি। বাকিটা সময় মতো জানিয়ে দেব।’’
গত দু’মাস ধরে দার্জিলিং পাহাড়ের পরিস্থিতির অনেকটাই বদল হয়েছে। দলবদল, দার্জিলিং পুরসভায় ক্ষমতা বদলের জেরে, রাজনৈতিক চেহারা পাল্টেছে। প্রশাসনিক স্তরে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি পাহাড়ে শুরু হলেও, এখনই তা করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর, কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী-অনীতের বৈঠকের অন্যতম বিষয় পঞ্চায়েত ভোটও। ইতিমধ্যে পাহাড়ে বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ড, বিনয় তামাংয়েরা এক জোট হয়েছেন। গুরুংয়ের দল এবং হামরো পার্টি পঞ্চায়েত ভোটে লড়বে বলে ঘোষণা করেছে। কাজেই, দু’দশক পরে পাহাড়ের পঞ্চায়েত ভোটে শাসক-বিরোধী লড়াই যে জোরদারই হবে, তা এক রকম পরিষ্কার। আবার এই তিন নেতার নেতৃত্বে পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবিও তোলা হচ্ছে। তার মোকাবিলা করে ভোটের রাস্তা পরিষ্কার করতে চাইছে কেন্দ্র।
মুখ্যমন্ত্রী বীরভূমে গিয়েছেন। আজ, মঙ্গলবার তাঁর মালদহে যাওয়ার কথা। ২ ফেব্রুয়ারির পরে, তিনি পাহাড় নিয়ে বৈঠকে বসতে পারেন বলে খবর। তবে সরকারি ভাবে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। জিটিএ-র এক প্রশাসনিক আধিকারিক জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই অনীত থাপারা কলকাতা গিয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে থাকায়, সময় বার করতে পারেননি। ফোনে প্রাথমিক ভাবে পাহাড় বিষয়ে কথা বলেছেন।
জিটিএ সূত্রের খবর, পাহাড়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন, প্রাইমারি কাউন্সিল আলাদা করে নেই। তা নিয়ে পাহাড়বাসীর ক্ষোভ রয়েছে। বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা বিভিন্ন চুক্তিতে কাজ করেন। আবার পূর্ত, ভূমিসংস্কারের মতো বেশ কিছু ক্ষেত্রে জিটিএ-র দফতরে ক্ষমতার পুরোপুরি হস্তান্তর হয়নি। তা নিয়ে কলকাতায় অনীতেরা আলোচনা শুরু করেছেন। এ ছাড়া, জিটিএ কর্মীদের বড় অংশ এখনও স্থায়ীকরণের বাইরে, যা নিয়ে বার বার আন্দোলন হয়েছে। অনীতেরা চাইছেন, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার আগেই সরকার পাহাড়ের দাবিদাওয়া বিষয়ে কিছু ঘোষণা করুক। তাতে ভোটের ময়দানে সুবিধা হবে।