কোচবিহার সাগরদিঘী।
‘নবান্ন’-এর বৈঠক থেকে সরকারি জমি দখল নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, কোচবিহারে বহু ‘হেরিটেজ়’ জায়গা দখল হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে বেশ কিছু দিঘির অংশ ভরাট করে দখলের অভিযোগ রয়েছে। যার মূল্য কোটি কোটি টাকা। বুধবার কোচবিহার হেরিটেজ় কমিটির বৈঠকে সে দিঘি পুরনো অবস্থায় ফেরানোর ব্যাপারে এক মত হলেন সবাই।
হেরিটেজ় কমিটি সূত্রের খবর, প্রথম ধাপে সাতটি দিঘি নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হবে। তার পরেই ওই দিঘিগুলি দখলমুক্ত করতে অভিযান চালানো হবে। সে তালিকায় কাইয়াদিঘি, মুস্তাফিদিঘি, লালদিঘি, ধোবাদিঘি রয়েছে। এর পরে প্ৰতিটি দিঘিতেই অভিযান চালানো হবে। কোচবিহার হেরিটেজ় কমিটির চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সরকারি জমির জবরদখল উচ্ছেদ নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে। দিঘি থেকে শুরু করে যে সব সরকারি জায়গা জবরদখল রয়েছে, তা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। তার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার শহরের ১৫৫টি নির্মাণকে ‘হেরিটেজ়’ ঘোষণা করা হয়েছে। সেগুলি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কিছু কাজ শেষ হয়েছে। কিছু কাজ চলছে। বড় অংশের কাজ এখনও বাকি। তা শেষ করতেই কাজে গতি আনার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে মতোই এ দিনের বৈঠকে সে কাজগুলি নিয়ে আলোচনা হয়। কোচবিহারের জেলাশাসক তথা হেরিটেজ় কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে, মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহারে এসেছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসেও প্রশাসনিক বৈঠকে হেরিটেজ়ের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। যে হেরিটেজ় ভবনগুলি রয়েছে, সেগুলির সংস্কারের কাজের অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে এমইডি ও পূর্ত দফতরকে।’’ ওই ‘হেরিটেজ়’ তালিকায় রয়েছে শহরের ৩৩টি দিঘি। অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে কুড়িটির কিছু কিছু অংশ দখল হয়েছে। বর্তমানে বিপন্ন লালদিঘি, চন্দনদিঘি। ধোবাদিঘি, মুস্তাফিদিঘি, গণকে দিঘি, রূপসীদিঘির একটি অংশ দখলের পথে। অভিযোগ, ওই দিঘিগুলির একটি অংশ ভরাট করে যে জমি বার করা হয়েছে, তার দাম কোটি কোটি টাকা।
এ দিনের বৈঠকে ছিলেন কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা বর্মণ, কোচবিহার পুরসভার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘প্রতিটি দিঘিকে পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।’’