প্রচারে নজরুল ইসলাম। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের রায়গঞ্জ ব্লকের ১৬ নম্বর আসনে এ বারে তৃণমূল প্রার্থী করেছে জ্যোৎস্না সিংহ বর্মণকে। রায়গঞ্জ ব্লকের জগদীশপুর পঞ্চায়েতের রুনিয়া এলাকার বাসিন্দা জ্যোৎস্না হেমতাবাদের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মণের স্ত্রী। কিন্তু জগদীশপুর পঞ্চায়েতের বিদায়ী তৃণমূল প্রধান জ্যোৎস্নার জয়ের পথে ‘কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে অ্যাম্বাস্যাডর গাড়ি। রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী তৃণমূল সদস্য তথা জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সহ সভাপতি মহম্মদ নজরুল ইসলাম জেলা পরিষদের ওই আসনে অ্যাম্বাস্যাডর প্রতীকেই ‘নির্দল’ প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত নজরুল বলেন, “কানাইয়াবাবু প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষ পর্যন্ত আমাকে টিকিট দেননি। আমি তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রচার ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে সামনে রেখে ওই আসনে নির্দল হিসেবেই লড়ছি।”
এখনও পর্যন্ত অবশ্য বাড়ি-বাড়ি গিয়ে, পদযাত্রা বা সভা করে প্রচার শুরু করেননি নজরুল। তার বদলে, তিনি অনুগামীদের নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশের বাড়িতে বৈঠক করে প্রচার সারছেন। উল্টো দিকে, জ্যোৎস্নাও বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জোরকদমে প্রচার শুরু করেছেন। তিনিও প্রচারে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা মানুষকে বোঝাচ্ছেন। জ্যোৎস্নার দাবি, “আমি তৃণমূলের ঘোষিত প্রার্থী। তাই উন্নয়ন ও সম্প্রীতির স্বার্থে মানুষ সুবিধাবাদী নির্দলদের বদলে আমাকেই ভোট দিয়ে জেতাবেন।” পাল্টা নজরুলের বক্তব্য, “ভোটের ফলেই সব স্পষ্ট হবে। আমার ও তৃণমূল প্রার্থীর ভোট কাটাকাটির জেরে বিরোধীরা এই আসনে জিতলে, তার দায় তৃণমূলকেই নিতে হবে।”
১৯৭৯ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন নজরুল। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তিনি কংগ্রেসের টিকিটে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে জয়ী হন। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের টিকিটে প্রথম বার জেলা পরিষদের আসনে জয়ী হন নজরুলের স্ত্রী সামিমা বেগম। তার পরেই, স্ত্রীকে নিয়ে নজরুল তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে নজরুল তৃণমূলের টিকিটে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে জেতেন। জেলা পরিষদের ওই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে দলের রায়গঞ্জ ব্লক সভাপতি আলি লিয়াকতকে। ওই আসনের সিপিএমের প্রার্থী মতিউর রহমান ও বিজেপির প্রার্থী বিভাস বিশ্বাস। তিন বিরোধী প্রার্থীরই দাবি, তৃণমূল ও নির্দল প্রার্থীর মধ্যে ভোট কাটাকাটি হবে। অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট হলে তাঁরা ভাল ফল করবেন।
জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, “দল নজরুলবাবুকে টিকিট দেয়নি। তিনি তৃণমূলের নেতা হয়ে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল হিসেবে লড়ে দলবিরোধী কাজ করেছেন। দল ঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেবে।”