মাঝখানে সাদা শার্টে গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।
সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারি দিলেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব। জানালেন, প্রয়োজনে পুলিশ, সেনা ডেকে উন্নয়নমূলক কাজ করাবেন। কিন্তু আর বাধা মানবেন না। শনিবার এমনই মেজাজে দেখা গেল গৌতমকে।
ফি বছর অল্প বৃষ্টিতেই কোমর জল জমে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের অশোকনগর এলাকায়। এই সমস্যার সমাধান চেয়ে প্রশাসনের কাছে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা আবেদন জানিয়েছেন একাধিক বার। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেই কাজ আটকেছে। এ বছর বর্ষাতেও জলমগ্ন হয়েছে ওই এলাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেক আবেদনের পর কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রতি বার পুরসভা নিচু এলাকার যুক্তি দিয়ে তাঁদের আবেদন পাশ কাটিয়েছে। তবে সম্প্রতি এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে শিলিগুড়ি পুরনিগম। বস্তুত, গত কয়েক দশকের সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। কিন্তু সেখানেও এল বাধা।
অশোকনগরে জমা জলকে কী ভাবে বার করে মহানন্দা নদীতে ফেলা যায়, তার একাধিক পরিকল্পনা গ্রহন করে পুরনিগম। ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শীতলাপাড়া হয়ে নালার মাধ্যমে মহানন্দা নদীতে জল ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে কিছু সমস্যার জন্য ওই পরিকল্পনা বাতিল করে পরে শক্তিগড় পিডব্লিউডি মোড় হয়ে মহানন্দায় জল ফেলার নকশা তৈরি হয়। শনিবার সেই এলাকা পরিদর্শন করে কাজের সূচনা করতে গেলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাধা আসে। তাঁদের আপত্তিতে ক্ষিপ্ত হন মেয়র গৌতম। বেশ কিছু ক্ষণ কথাবার্তার পর তিনি হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘শুনুন দাদা, অনেক কথা শুনেছি। আর শুনব না। উন্নয়নের কাজে বাধা দিলে এ বার পুলিশ, মিলিটারি দিয়ে কাজ করানো হবে।’’ পরে অবশ্য পরিস্থিতি সামলে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের আশ্বস্ত করে মেয়র বলেন, ‘‘কারও কোনও ক্ষতি করে কাজ হবে না।’’
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিনের জমা জলের এই সমস্যা মেটাতে একাধিক বার ডিজ়াইন পরিবর্তন করা হয়েছে। এশিয়ান হাইওয়ে থেকে অনুমতি নিয়ে রাস্তার তলা দিয়ে হিম পাইপের মাধ্যমে জল জেট ‘পুশ’ করে মহানন্দায় ফেলা হবে। দোকানদারেরা মনে করছেন, এতে তাঁদের দোকানের ক্ষতি হবে। কিন্তু তাঁদের কোনও ক্ষতিই হবে না। সে ভাবেই নকশা করা হয়েছে। তাঁদের সোমবার পুরনিগমে ডেকেছি। সবটা বুঝিয়ে দেওয়া হবে সেখানে।’’ গৌতমের আশ্বাস, আর সাত থেকে আট মাসের মধ্য এই কাজ শেষ হয়ে যাবে। অশোকনগরে জল জমার সমস্যা একেবারে মিটে যাবে।