—নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি পুরনিগমের তরফে সরবরাহ করা জল আগামী কয়েকদিন পান করতে নিষেধ করলেন মেয়র গৌতম দেব। বর্তমানে মহানন্দা থেকে জল নিয়ে তা পরিস্রুত করে শহরে পানীয় হিসেবে সরবরাহ করা হয়। সেই জলের মান খারাপ ধরা পড়ায় পুরনিগমের তরফে তা পান করতে নিষেধ করা হয়েছে। যদিও সেই জল গৃহস্থালীর অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে।
শহরের নাগরিকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে বুধবার বিকেল থেকে পুরনিগমের তরফে পাউচে করে পানীয় জল সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া ২৬টি পানীয় জলের ট্যাঙ্ক বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হবে। সেই জল পান করা যাবে বলে পুরনিগমের তরফে জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, মেয়র জানিয়েছেন, পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কেউ যাতে পুরনিগমের সরবরাহ করা পানীয় জল পান না করেন। তবে বাড়ির অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে সেই জল।
গৌতম দেব বলেনষ ‘‘জলের বিওডি (বায়োলজিকাল অক্সিজেন ডিমান্ড) কম থাকায় পুরনিগমের সরবরাহ করা পানীয় জল পান করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ আমাদের। জল প্রতি দিনের মতই সরবারহ হবে, তবে সেটা অন্যান্য কাজে ব্যাবহার করা যাবে। জলের অন্যান্য প্যারামিটার ঠিক রয়েছে। কিন্তু বিওডি বেশি থাকায় তা পানীয় জল হিসেবে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকছে। আগামী মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত পানীয় জল হিসাবে পান করতে না করছি। বিভিন্ন বরো অফিসের মাধ্যমে এক লক্ষ জলের পাউচ দেব। পানীয় জলের ট্যাঙ্কার দিন দু’বেলা জল সরবারহ করব। পাশাপাশি যাঁরা পানীয় জলের ব্যবসার সাথে জড়িত সেখানে যেন কোনও কালোবাজারি না হয় সে জন্য তাঁদের সাথেও বৈঠক করছি।’’
অন্য দিকে বিগত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে শিলিগুড়ি শহরের মানুষ কোন জল পান করলেন? মেয়রকে এক হাত নিয়ে শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘বিগত প্রায় ১৫ দিন ধরে শিলিগুড়ির মানুষ তা হলে দুষিত জল, বিষযুক্ত জল খেলেন। কোন পরীক্ষা না করেই এই জল মানুষকে খাওয়ানো হল। এর দায় কার? আমার মনে হয় মেয়র সাহেব পুরনিগম পরিচালনা করতে অদক্ষ বা জলের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন বা দফতরের কর্মীরা তথ্য গোপন করেছেন মেয়রের কাছে যে, পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই জল সরবারহ করা হয়। বিওডির তারতম্য একবারে ঘটেনি৷ দীর্ঘদিন পরীক্ষা না করার কারনেই এই ঘটনা। এর জবাব মেয়র সাহেবকে দিতে হবে।"
বিধায়কের এমন আক্রমনে মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘এই রিপোর্ট গত কালই হাতে পেয়েছি। তার আগে যে জল সরবারহ করা হয়েছে তার বিওডি লেভেল ঠিক ছিল। ওঁর প্রশ্নের কোন উত্তর আমি দেব না।’’
উল্লেখ্য, সিকিমের বিপর্যয়ের ফলে গজলডোবার তিস্তার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ বর্ষার ঢোকার আগেই সেই বাঁধ সারিয়ে তুলতে চাইছে সরকার। বাঁধ মেরামতির কারণেই তিস্তা থেকে জল উত্তোলন বন্ধ। শিলিগুড়ি শহর নির্ভর করে থাকে তিস্তার জলের উপর। যদিওবা মেয়রের দাবি, আগামী মাসের ২ তারিখে ফের তিস্তার জল সরবারহ করা হবে।
অন্য দিকে পুরনিগম সুত্রে খবর, বাম আমলে মহানন্দা বা বালাসনের জল ব্যাবহার করার জন্য একাধিক বার পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়েছে। বদলে দেখা হয়েছে ট্রিটমেন্টের ধরন, কিন্তু কোনও প্রকারেই তা পানীয়যোগ্য করে তোলা যায়নি।