ফুলবাড়িতে অশোক ভট্টাচার্য
পনেরো বছরের পুরনো ফুলবাড়ি পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্পটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। তাতে নিয়ম মাফিক দুই বেলা নির্ধারিত সময়ে জল সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে মাঝেমধ্যেই।
শনিবার মেয়র পারিষদদের একাংশকে নিয়ে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানালের যে জায়গা থেকে জল তোলা হয় তা পরিদর্শন করেন। পরে শিলিগুড়িতে থাকা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, মহানন্দা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ-সহ জল সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে পুরসভায় বৈঠক করেন মেয়র। বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে ১৩ জনের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। জল সরবরাহে কোনও সমস্যা হলে তারা আগাম তথ্য দেবেন।
পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, তার মধ্যে ফুলবাড়ি ক্যানালে সংস্কার কাজ চলায় ওই পথে জল আসা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তাতে ফুলবাড়িতে তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানালের যেখান থেকে শহরে সরবরাহের জন্য পানীয় জল সংগ্রহ করা হয় সেখানে জলস্তর নেমে যাচ্ছে।
জল সংগ্রহ করতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুরকর্মীরা। তার উপর লিঙ্ক ক্যানালে ৭০ ফুট গভীর কুয়োর যে ব্যবস্থা থেকে জল তোলা হয় পলি জমে তার অর্ধেকের বেশি ভরাট হয়ে পড়েছে। ফলে নিদির্ষ্ট সময়ে পাম্প করে পর্যাপ্ত জল তোলা যাচ্ছে না। পাম্পে জলের সঙ্গে পলিও উঠছে। বিদ্যুৎ লাইনেও দিন কয়েক আগে সংস্কার কাজ চলছিল। সব মিলিয়ে জল সরবরাহে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। মেয়র বলেন, ‘‘পরিস্থিতি গত এক সপ্তাহের চেয়ে এখন কিছুটা ভাল। তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানালে যেখানে জল তোলা হয় সেখানে জমে থাকা পলি তোলার কাজ চলছে। ক্যানাল সংস্কারের কাজও ২৫ জুনের মধ্যে তিস্তা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ শেষ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তাতে দ্রুত জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।’’ মেয়র জানান, যে সমন্বয় কমিটি গড়া হয়েছে, কোনও সমস্যা হলে তারা আগাম জানাবে। সেই মতো বাসিন্দাদের জানানো হবে। চার নম্বর জোনে ডাবগ্রাম এলাকায় একটি পুরনো জলাধার সংস্কার করতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে ৯৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। তা ছাড়া ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে জোন ১০-এর নির্মীয়মাণ জলাধারের কাজ এগিয়ে নিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।
গজলডোবা থেকে শিলিগুড়ি শহরে পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্প কয়েক বছর আগে ঘোষণা করেছিলেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ওই প্রকল্প কবে হবে তা এখনও অনিশ্চিত। সম্প্রতি সুব্রতবাবুর সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় গিয়েছিলেন অশোকবাবু। কিন্তু দেখা মেলেনি। মেয়রের দাবি, সমস্যার কথা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রধান সচিবকে জানানো হয়েছে। তিনি জনিয়েছেন, সমস্যা খতিয়ে দেখতে দফতরের এক পদস্থ বাস্তুকারকে শিলিগুড়িতে পাঠানো হবে। বর্তমান প্রকল্পটি কী ভাবে পুনরুজ্জীবিত করা যায় সে ব্যাপারে তারা পরামর্শ দেবেন।
এ দিন পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ শরদ্বিন্দু চক্রবর্তী, পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ মুন্সি নুরুল ইসলাম, জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত এবং দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, মহানন্দা ব্যারেজ, তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেলে সেখান থেকে জল তোলা হয় তা পরিদর্শন করেন। জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ, শরদিন্দুবাবু জানান, সমস্যা কাটিয়ে পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক করতে দ্রুত ব্যবস্থা হচ্ছে।