পরিদর্শন: নিকাশি ও জঞ্জাল সমস্যা নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনায় তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি মৌসম নুর। সোমবার, ইংরেজবাজারের সুভাষপল্লিতে। নিজস্ব চিত্র
প্রায় এক মাস ধরে বৃষ্টি নেই শহরে। তবুও নিকাশি নালা উপচে সেই জল কোথাও রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে, কোথাও বা মাঠ ভরে রয়েছে জলে। ভারী বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই, গোটা এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
ঘরে ঘরে ঢুকে পড়ে জল। অভিযোগ, নিকাশি নালা নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় সেই জল উপচে পড়ছে এলাকায়। এ দিকে, জঞ্জালে ভরা নর্দমায় ক্রমশ বাড়ছে মশার উপদ্রব। এ দিকে, এলাকায় জঞ্জাল ফেলার ভ্যাট বা ডাস্টবিন না থাকায় যত্রতত্র জমে থাকে আবর্জনা। নিয়মিত সাফাই হয় না তা-ও। ফলে দুর্গন্ধে টেকা দায়! এমনই পরিস্থিতি ইংরেজবাজার শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লি এলাকা জুড়েই।
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা রবিবার দল বেঁধে মালদহ জেলা তৃণমূলের কার্যালয় নুর ম্যানশনে গিয়ে দলের জেলা সভাপতি মৌসম নুরের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। আর সেই অভিযোগ পেয়ে সোমবার সকালেই সুভাষপল্লি এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন মৌসম। বেহাল সেই নিকাশি নালা, জঞ্জালের ছবিও নিজের মোবাইল বন্দি করলেন তিনি। সমস্যা নিয়ে কথা বললেন বাসিন্দাদের সঙ্গে। দ্রুত সমস্যা মেটানোর আশ্বাসও দেন মৌসম। এখন দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, শহরের এ সব সমস্যা মেটাতে যদি দলের জেলা সভাপতিকে এ ভাবে এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হয়, তবে দল পরিচালিত পুরবোর্ড কি কাজ করছে? বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভায় বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। তাই দলের জেলা সভাপতির কাছে দরবার করতে হয়েছে।
ইংরেজবাজারের রথবাড়ি থেকে স্টেশন রোড ধরে কানির মোড় যেতে রাস্তার বাঁদিকে পড়ে সুভাষপল্লি এলাকা। ঘনবসতি রয়েছে সেখানে। এলাকাটি নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, একেই এলাকা নিচু, তার উপরে সুভাষপল্লির একদিক জুড়ে রেললাইন থাকায় বৃষ্টির জল বার হতে পারে না। একই সমস্যা নিকাশি নালার জল নিয়েও। জঞ্জাল জমে নিকাশি নালার জল বার হতে পারে না, ফলে, বছরভর এলাকায় নোংরা জল দাঁড়িয়ে থাকছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, জমে থাকা ওই জলে মশার উপদ্রব বাড়ছে, ডেঙ্গির প্রকোপও রয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্তও হয়েছেন।
সুভাষপল্লির বাসিন্দা শিবাশিস দাস, রঞ্জিত লাহা, গৌতম দাসরা জানান, একেই এলাকার নিকাশি নালা সাফাই হয় না, তার উপরে সেই নোংরা জল উপচে রাস্তার উপর উঠে আসছে। আবর্জনা ফেলার কোনও নির্দিষ্ট ডাস্টবিনও নেই। শিশুদের একটি পার্ক ছিল, সেটিরও ভগ্নদশা। তাঁদের অভিযোগ, এই সব সমস্যা নিয়ে আমরা পুরসভাকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে মৌসম নুরের কাছে দরবার করি।মৌসম বলেন, ‘‘সুভাষপল্লির বাসিন্দারা রবিবার এসেছিলেন দলের জেলা কার্যালয়ে। নিকাশি এবং নানা সমস্যার কথা তাঁরা জানান। আমি নিজে এ দিন ঘুরে দেখলাম সবটা। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বললাম। সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব। পাশাপাশি সেখানে রেলের তরফে একটি নিকাশি নালা তৈরির কথা আছে। সেই বিষয়টি নিয়ে রেলের ডিআরএম এবং জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলা হবে। সমস্যা যাতে দ্রত মেটানো যায় তা নিশ্চিত করতে হবে আমাদের।’’
পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘ওই সমস্যার কথা আমাকে কেউই জানায়নি। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’