হবিববপুর থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর। রতুয়া থেকে গাজোল। কখনও শিলান্যাস। আবার উদ্বোধন। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে চলছে ছোট ছোট সভাও।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ভাবেই নিজের সাংসদ এলাকায় দলের ভিত মজবুত করতে এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কংগ্রেসের সভানেত্রী, উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। যদিও মৌসমের এই তৎপরতাকে কটাক্ষ করে পাল্টা সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, জনপ্রিয়তা কমছে কংগ্রেসের, মৌসমেরও। তাই পঞ্চায়েত নয়, নিজের লোকসভা কেন্দ্রের আসন ধরে রাখতে মাঠে নেমে পড়েছেন তিনি। যদিও তাতে আমল দিতে নারাজ মৌসম। তিনি বলেন, “মানুষের জন্য আমরা কাজ করি। সেটাই করে যাচ্ছি।”
সোমবার দুপুরে নিজের সাংসদ তহবিল থেকে গাজল ব্লকের পাণ্ডুয়ায় দুটি পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মৌসম। এ দিনই গাজলেরই বৈরগাছি অঞ্চলে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সভাও করেন তিনি। ডিসেম্বরেই চাঁচলে স্টেডিয়াম, নরহাট্টায় উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বাতিস্তম্ভ, ভাক্রি পঞ্চায়েতে কালভার্ট ও চাঁচলেরই ধানগাড়ায় সেতুর কাজের সূচনা করেছেন মৌসম।
শিলান্যাস, উদ্বোধনের সঙ্গেই উত্তর মালদহের দশটি ব্লকে নিয়মিত সভাও করছেন তিনি। কেন এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তিনি? কংগ্রেসের এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘মালদহ জেলা পরিষদ দীর্ঘদিন আমাদের দখলে ছিল। বছর খানেক আগে দলবদলের পর তার দখল নেয় তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা পরিষদের মাধ্যমে তৃণমূল বিভিন্ন কাজের শিলান্যাস, উদ্বোধনের কাজ শুরু করেছে। তাই তৃণমূলকে টেক্কা দিতে সাংসদ নিজের তহবিল থেকে টাকা খরচ করে মানুষের উন্নয়ন করছেন।’’
যদিও রাজনৈতিক মহলের দাবি, তৃণমূল দলবদলের পর জেলা পরিষদ সহ একাধিক পঞ্চায়েত সমিতিও কংগ্রেসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। যার ফলে কংগ্রেস সেই এলাকায় কাজ করে প্রচার চালাতে ব্যর্থ। তাছাড়া পঞ্চায়েত নির্বাচনের বছর গড়াতে না গড়াতেই লোকসভা ভোট। তাই পঞ্চায়েত গুলি দখল করে নিজের সাংসদ এলাকা পাকা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সাংসদ মৌসম।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “কংগ্রেস উন্নয়ন না করে, শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোটের ময়দানে টিকে থেকেছে। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে মানুষ তাঁদের কাছে জবাব চাইছেন। তাই মানুষকে চমক দেওয়ার জন্য শিলান্যাস শুরু করেছেন তিনি।” যদিও মৌসমের দাবি, “মালদহের মানুষ কংগ্রেসের সঙ্গে আছেন, থাকবেন। জেলার উন্নয়নে একমাত্র কংগ্রেসই ভরসা।”