প্রতীকী ছবি।
কলকাতা থেকে ফেরা তিন শ্রমিকের দেহেই জেলায় প্রথম হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। তার জেরে মহানগরী ফেরত লোকেদের নিয়ে ভয় ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে।
এমনই পরিস্থিতিতে সোমবার দুপুরে কলকাতা থেকে ট্রাকে বিহারের দিকে যাওয়া ২৪ জন শ্রমিককে আটক করল পুলিশ। পুলিশের নজর এড়াতে তাঁরা ট্রাকের পিছনের অংশ ত্রিপলে ঢেকে তার নীচে গাদাগাদি করে বসেছিলেন। ইটাহার থানার পুলিশকর্মীরা গাড়ি নিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ধাওয়া করে শিলিগুড়ি মোড় এলাকার জাতীয় সড়কে ওই ট্রাক আটকান। খবর পেয়ে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কয়েক জন শ্রমিককে ট্রাক থেকে নামিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে শ্রমিক-বোঝাই ট্রাকটিকে বিহারের দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ভিন্ জেলা বা রাজ্য থেকে কেউ জেলায় ঢুকলে তাঁদের সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর কথা। এর পরে বহিরাগতদের লালারস সংগ্রহ করে তাঁদের সরকারি কোয়রান্টিনে পাঠানোর নিয়ম। এই পরিস্থিতিতে ওই শ্রমিকদের কেনও স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা না করে ছেড়ে দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শহরবাসীর একাংশের প্রশ্ন, ওই শ্রমিকদের কয়েক জন এ দিন শিলিগুড়ি মোড় এলাকায় নামেন। তাতে আশঙ্কা থেকেই যায়।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমারের অবশ্য দাবি, সরকারি নিয়মে বিহারেই তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হওয়ার কথা। সেই কারণে পুলিশ তাঁদের ছেড়ে দিয়েছে।
ওই ২৪ জন শ্রমিকের বাড়ি বিহারের বেগুসরাই এলাকায়। তাঁরা কলকাতার লালবাজার এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন। তাঁদের মধ্যে মহম্মদ সঞ্জয় ও মহম্মদ মেহেমুদের বক্তব্য, লকডাউনের জেরে কাজ না থাকায় গত দেড়মাস ধরে টাকা ও খাবারের অভাব ছিল। কোয়রান্টিনে পাঠানো হবে, সেই ভয়ে তাঁরা কলকাতায় স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাননি। রবিবার সন্ধ্যায় মাথাপিছু এক হাজার টাকা করে ভাড়ায় একটি ট্রাক ভাড়া করে তাঁরা বেগুসরাইয়ে রওনা দেন।