হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ফিরে এলেন ভারত ও নেপালের ছাত্র ছাত্রীরা। ছবি: অমিত মোহান্ত
অশান্ত বাংলাদেশ থেকে রবিবার মালদহের মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭৪ জন এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত পথে ৩২০ জন ডাক্তারির ছাত্রছাত্রী ফেরত এলেন ভারতে। তাদের কারও বাড়ি এ রাজ্যে। তবে বেশির ভাগেরই বাড়ি কাশ্মীর, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড-সহ দেশের নানা রাজ্যে। পাশাপাশি কিছু নেপালি পড়ুয়াও হিলি সীমান্ত দিয়ে এ পারে এসেছেন। এ দিকে, বাংলাদেশের সরকার রবি ও সোমবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করায় এদিন মহদিপুর সীমান্ত পথে বাণিজ্য কার্যত বন্ধ ছিল।
পড়ুয়ারা জানান, ভারতীয় দূতাবাস এবং সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজ উদ্যোগী হয়ে তাঁদের কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মহদিপুর ও হিলি সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছতে বাসের ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশের পুলিশ এসকর্ট করে সেই বাস সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। যদিও বাসের খরচ বহন করতে হয়েছে পড়ুয়াদেরই। দেশে ফিরলেও ট্রেন ও বিমানের টিকিট না মেলায় মালদহ বা হিলি থেকে বাড়ি কী করে ফিরবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ুয়ারা। কেউ চড়া ভাড়ায় ছোট গাড়ি করে কলকাতায় রওনা দিয়েছেন, আবার কেউ ট্রেনে-বাসে করে কলকাতা গিয়েছেন বিমান ধরার লক্ষ্যে। পাশাপাশি, কবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি শান্ত হবে এবং তারা ফের মেডিক্যালে ফিরবেন তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন পড়ুয়ারা।
মালদহের মহদিপুর সীমান্ত পথে রবিবার বাংলাদেশ থেকে এ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পড়ুয়ারা সকাল ১০ টার পর থেকে ফিরতে শুরু করেন। বেশিরভাগই সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনেস আলি মেডিক্যাল কলেজের প্রথম থেকে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রছাত্রী। কয়েকজন ও পারের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের পড়ুয়াও ছিলেন। শ্রীনগরের বাসিন্দা খাজা ইউনেস আলি মেডিক্যালের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া মুসাব্বা জামিল বলেন, ‘‘গত বুধবার থেকে বাংলাদেশে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় আমরা পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারিনি। এখন কী ভাবে বাড়ি পৌঁছব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।" উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের পর্ণা রায় বলেন, "আন্দোলনের প্রভাব সরাসরি আমাদের মেডিক্যাল কলেজে পড়েনি ঠিকই, কিন্তু আমরা আতঙ্কে ছিলাম। শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরলেও কলকাতা থেকে বিমানের টিকিট না মেলায় বাড়ি ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’’ বাংলাদেশ টিএমএস মেডিক্যাল কলেজের আর এক ছাত্র, অসমের রেজাউল সফির কথায়, ‘‘ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আমরা এই ক'দিন পরিস্থিতির সঠিক খবর পাচ্ছিলাম না। হস্টেলে বন্দি হয়ে ছিলাম।’’
এ দিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দিন বলেছেন, "প্রায় ৩০০ ছাত্রছাত্রী হিলি দিয়ে ফিরেছেন। প্রশাসনকে বলেছি, ওদের সব রকম ভাবে সাহায্য করতে।"
তথ্য সহায়তা: জয়ন্ত সেন, শান্তশ্রী মজুমদার ও অনুপ মোহান্ত