দেরিতে আসায় টেট পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে না পেয়ে বিক্ষোভ টেট পরীক্ষার্থীদের, শিলিগুড়ি তরাই তাঁরাপদ বিদ্যালয়ের সামনে তোলা। ছবিঃ বিনোদ দাস।
শিক্ষক জানিয়ে দিলেন, পরীক্ষাকেন্দ্রের গেট ১১টায় বন্ধ করা হবে। তার আগে স্কুলের প্রধান গেট পার করে স্কুল চত্বরে ঢুকতে হবে পরীক্ষার্থীদের, ঘোষণা শিক্ষকের। কিন্তু তখনও প্রথম গেটের বাইরে একাধিক পরীক্ষার্থী। ১১টায় গেট বন্ধ হল। ঢুকতে পারলেন না পঞ্চাশের বেশি পরীক্ষার্থী। গেটের কাছে থাকা পুলিশদের তাঁরা নানা ভাবে অনুরোধ করেও, ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ি শহরের তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়ের ঘটনা। বন্ধ গেটে ধাক্কা দেওয়া থেকে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।
শক্তিগড়ের বাসিন্দা সৌরভ রায় কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘অনেক আশা করে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। একটা বছর নষ্ট হল।’’ পরীক্ষার্থী শিলা বাড়ুই বলেন, ‘‘সংসার সামলে সময় বার করে প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল। পরিবারে একটা চাকরি খুব জরুরি। ১১টাতে পৌঁছেও ঢুকতে দেওয়া হল না।’’
হলে ঢুকতে না পারা পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, এক ঘণ্টা আগে গেট বন্ধের কথা অ্যাডমিট কার্ডে লেখা নেই। তরাই তারাপদের প্রধান শিক্ষক অশোক নাথ অবশ্য বলেন, ‘‘প্রাইমারি কাউন্সিলের নির্দেশ মতোই ১১টার পরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তার পরেও, ১১টা পর্যন্ত যাঁরা গেটের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল।’’
শুধু তরাই তারাপদতে ১৯১ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, জেলায় মোট ২,৬০০ জন পরীক্ষার্থীর সিট পড়েছিল। মোট ৬৫২ জন পরীক্ষা দেননি। অনুপস্থিতির এমন হার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এক পরীক্ষার্থীর দাবি, ‘‘পাশ করে, দিনের পরে দিন ধর্নায় বসেও কোনও সুরাহা নেই। অনেকের অনীহা তৈরি হয়েছে।’’পরীক্ষার্থীদের হলে ঢোকানো হয়েছে কড়া নিরাপত্তায়। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাতের ছাপ দিতে হয়েছে। অ্যাডমিট কার্ড, পরিচয়পত্র ছাড়া, কোনও কিছু নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গলার, কানের গয়না খুলে রাখতে বলা হয়েছিল অনেককে। এ দিন পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টার মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ছড়ায় (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) বলে অভিযোগ। পরীক্ষা শেষে ‘ভাইরাল’ হওয়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পরীক্ষার বেশ কিছু প্রশ্নের মিল খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি পরীক্ষার্থীদের।