তৃণমূলের বৈঠক। সোমবার ফালাকাটায়। নিজস্ব চিত্র
বিধানসভা উপ নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে গত শুক্রবারই দলের নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিয়ে ফালাকাটায় সংগঠনকে ঢেলে সাজতে বলেছিলেন তৃণমূলের বিশেষ পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তার তিন দিনের মধ্যেই ফালাকাটায় দলে ব্যাপক রদবদল করল তৃণমূল।
গত বছর লোকসভা নির্বাচনে দলের হারের পরে মোহন শর্মাকে সরিয়ে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি করা হয় মৃদুল গোস্বামীকে। স্বাভাবিক ভাবেই তারপর দলের বিভিন্ন ব্লক কমিটি ভেঙে দেন মৃদুল। কয়েকটি জায়গায় ব্লক সভাপতি পরিবর্তনও করা হয়। এরইমধ্যে গত অক্টোবর মাসে ফালাকাটার বিধায়ক অনিল অধিকারীর মৃত্যুর পর সেখানে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি করা হয় সন্তোষ বর্মণকে। সোমবার সন্তোষই দলের নতুন ব্লক কমিটি ও বিভিন্ন অঞ্চল কমিটির পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করেন।
তৃণমূলের তরফে এ দিন ১০৯ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। সূত্রের খবর, যার মধ্যে প্রায় ষাট শতাংশই নতুন মুখ। পনেরোটি অঞ্চল কমিটিও এ দিন দলের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে পাঁচটি অঞ্চলে সভাপতি বদল করা হয়েছে। ব্লক কমিটিতে সংখ্যালঘু সেলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি আব্দুল মান্নানকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
গত শুক্রবার দলের অন্দরে ‘করে কম্মে’ খাওয়া নেতাদের সরিয়ে তাঁদের জায়গায় স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের তুলে এনে সংগঠনকে সাজতে বলেছিলেন রাজীব। ফলে প্রশ্ন উঠছে, রাজীবের এই নির্দেশের জেরেই কি এত পরিবর্তন? তৃণমূলের ফালাকাটা ব্লক সভাপতি সন্তোষ বর্মণ অবশ্য বলছেন, ‘‘বয়সের কারণে যাঁরা তেমন দৌঁড়ঝাপ করতে পারছিলেন না, তাঁদের জায়গাতেই নতুন মুখ আনা হয়েছে। যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাদের আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, লকডাউনের সময় যে সব যুবনেতা দিন-রাত এক করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁদের অনেককেই দলের ব্লক কমিটিতে আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে রাজু মিশ্র, সুভাষ রায়, প্রদীপ মুহুরী, সন্ধ্যা বিশ্বাস এবং সহ সভাপতি পদে ত্রিনাথ সাহারা রয়েছেন। বিধানসভার উপ নির্বাচনের আগে ফালাকাটাবাসীর কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরতেই এখন বেশি মরিয়া তৃণমূল।