প্রতীকী চিত্র।
বালিয়া নবাবগঞ্জের গুজরঘাটে গণধর্ষণ কাণ্ডের পাঁচ দিন পর রবিবার সকালে মালদহ জেলার গাজল থেকেএক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকি অভিযুক্তদেরও দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে নির্যাতিতার মাসির বাড়ি দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দারা। রবিবারও তাঁরা মালদহ থানায় গিয়ে এই দাবি জানিয়ে আসেন। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ধৃতের নাম অশোক সাহা ওরফে ড্যানি। বাড়ি পুরাতন মালদহের বালিয়া নবাবগঞ্জে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’’
পুরাতন মালদহ শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডের বালিয়া নবাবগঞ্জ গুজরঘাটে মহানন্দা নদীর পারে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানার এক গৃহবধূ। তাঁর স্বামীও সঙ্গে ছিলেন। অভিযোগ, অভিযুক্তদের একাংশ স্বামীকে মারধর করে ও মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে অনেক দূরে নিয়ে যায়। সেই সুযোগে ওই বধূকে তুলে নিয়ে গিয়ে নদীর পাড়ে গণধর্ষণ করা হয়। পরদিন বধূ নিজেই মালদহ থানায় গিয়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
কিন্তু ঘটনার চার দিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও কোনও অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। প্রশ্ন উঠে, পুলিশ কি তদন্তে ঢিলে দিয়েছে ও ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে? বাসিন্দারা জানতে চাইছেন, নির্যাতিতা অভিযোগপত্রে অভিযুক্তদের একাংশের নাম জানান সত্ত্বেও কেন অভিযুক্তদের মোবাইল টাওয়ার খুঁজে পুলিশ তাদের বের করতে পারল না? শেষ পর্যন্ত, রবিবার সকালে মালদহ থানার পুলিশের একটি দল গাজল থেকে অশোক সাহাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বধূ তার অভিযোগপত্রে মূল যে দুই অভিযুক্তদের নাম জানিয়েছিলেন ধৃত তাদের মধ্যে এক জন।
আশরাফুল আলম, নওশাদ আলি, কাইয়ুম সেখানে বলেন, ‘‘নির্যাতিতা অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে আমরা রোজ থানায় গিয়ে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি নিয়ে টালবাহানা করছিল। অবশেষে এ দিন এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমরা চাই ওই ঘটনায় জড়িত থাকা প্রত্যেককেই পুলিশ যেন গ্রেফতার করে এবং অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, এক বধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় তাঁদের জায়গার নাম জড়ানোয় তাঁরা খুবই লজ্জিত। অভিযুক্তরা ধরা পড়লে তাঁরাও শান্তি পান। এলাকার কিছু মানুষের জন্যই সেই রাতে ওই বধূ আরও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে দাবি। তিনি চিৎকার করে উঠলে কয়েক জন বাসিন্দা বেরিয়ে এলে দুষ্কৃতীরা পালায়।