ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিয়ো।
অন্ধকারের মধ্যে এ দিক-ও দিক থেকে পড়ছে টর্চের আলো। তার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তির সঙ্গে ধস্তাধস্তি চলছে কয়েক জনের। চলছে প্রবল চিৎকার-চেঁচামেচিও। ওই ব্যক্তি নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বাকিরা জোর করে তাঁকে আটকে রাখতে চাইছেন। শুধু তাই না, ভিড়ের মধ্যে থাকা কেউ কেউ সাদা কিছু একটা দিয়ে ওই ব্যক্তির হাত বাঁধারও চেষ্টা করছেন। ভিড়ে থাকা কয়েক জন পুলিশ কর্মী সকলকে বুঝিয়ে ওই ব্যক্তিকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
শনিবার সকাল থেকে এমনই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় আলিপুরদুয়ার জেলার পুলিশ মহলে চাঞ্চল্য ছড়াল। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার। তবে পুলিশের একাধিক সূত্রের দাবি, ভিডিয়োয় যে ব্যক্তিকে আটকে রাখা হয়েছে কিংবা কিছু দিয়ে হাত বাঁধার চেষ্টা করা হচ্ছে, তিনি শামুকতলা থানার অধীন ভাটিবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ওসি পার্থ বর্মণ। আলিপুরদুয়ার- ২ব্লকের দক্ষিণ পারোকাটায় শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে আলিপুরদুয়ারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তীকে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। শামুকতলা থানায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওসি পার্থকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই থানাতেই তাঁকে ডিউটি করতে বলা হয়েছে।
যদিও জেলার পুলিশ কর্তাদের দাবি, সম্পূর্ন ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ভাটিবাড়িতে লোডশেডিং ছিল। এ দিকে, জেলার পুলিশ কর্তাদের নির্দেশেই দক্ষিণ পারোকাটা এলাকায় চলা একটি মেলায় টহলে যান পার্থ। মোবাইলে চার্জ দিতে এক পরিচিতর বাড়িতে ঢোকেন তিনি। পার্থ সাদা পোশাকেই ছিলেন। অভিযোগ, গভীর রাতে একটি বাড়িতে এ ভাবে পার্থকে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয় কয়েক জনের। তার পরই গোটা ঘটনা শুরু হয়। খবর পেয়ে মেলা প্রাঙ্গণে থাকা অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা দ্রুত এসে তাঁকে উদ্ধার করেন।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটি দেখেছি। প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছি, ভাটিবাড়ি ফাঁড়ির ওসি একটি বাড়িতে মোবাইল ফোন চার্জ করতে গিয়েছিলেন। তখন ভুল বোঝাবুঝি থেকে এই ঘটনাটি হয়। ভিডিয়োতে যাঁদের দেখা গিয়েছে, সোই গ্রামবাসীরা এ দিন নিজেদের ভুল স্বীকারও করে নিয়েছেন। কিন্তু ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ায় এসডিপিও-কে ঘটনার তদন্ত করে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওসি শামুকতলা থানায় ডিউটি করবেন।” বিষয়টি নিয়ে ওসি পার্থ মন্তব্য করতে চাননি।