শুয়োপোকার ছত্রাক পাচার করতে গিয়ে গ্রেফতার এক। —নিজস্ব চিত্র।
বিরল প্রজাতির শুঁয়োপোকার ছত্রাক চিনে পাচারের ছক ছিল। অভিযান চালিয়ে ভিন্জেলার এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করল শিলিগুড়ির বন দফতর। পলাতক আরও দুই পাচারকারীর খোঁজ শুরু হয়েছে। বন দফতর সূত্রে খবর, ধৃতের নাম দেন্দুপ তামাং। তিনি কালিম্পঙের দান্তে দালমানের বাসিন্দা।
শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শিলিগুড়ির সমরনগর এলাকায় অভিযান চালায় বৈকুণ্ঠপুর বন দফতরের একটি দল। সেখানে এক পাচারকারীকে ধরে তারা। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৩.২০ গ্রাম শুঁয়োপোকার ছত্রাক। বন দফতর সূত্রে খবর, অভিযানের সময় আরও দুই পাচারকারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা কোনও ভাবে পালিয়ে যান। তাঁদের কাছে কমবেশি এক কেজি শুঁয়োপোকার ছত্রাক আছে বলে দাবি বন দফতরের। আগেও বেশ কয়েক বার অন্য বন্যপ্রাণ পাচারের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এই প্রথম বার বিরল প্রজাতির ওই শুঁয়োপোকার ছত্রাকের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় চিন্তা বেড়েছে বন দফতরের আধিকারিকদের। কারণ, এই ছত্রাক মূলত সিকিমের উচ্চ পর্বতশৃঙ্গের কাছাকাছি থাকা জঙ্গলে পাওয়া যায়।
বন দফতর সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া ওই ১৩.২০ গ্রাম ছত্রাকের আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য প্রায় ২১ হাজার টাকা। এক কেজির দাম প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহের পর এই ছত্রাক মূলত যায় চিনে।
কী কাজে লাগে এই ছত্রাক? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ‘‘এই ছত্রাক দিয়ে ‘হিমালয়ান ভায়াগ্রা’ বা যৌনশক্তি বৃদ্ধির ওষুধ তৈরি হয়। এ ছাড়া ফুসফুস, কিডনির জটিল রোগের ওষুধ তৈরিতে এই শুয়োপোকার ফাঙ্গাস ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে চিনে।’’ বাংলার শিলিগুড়িতে হাতবদলের পর নেপাল হয়ে চিনে ওই ছত্রাক পাচারের পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীদের। ইতিমধ্যে ছত্রাক পাচার বন্ধ করতে সিকিমের বন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন রাজ্যের বন দফতরের আধিকারিকেরা।
এ নিয়ে উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ বিভাগের মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘শুঁয়োপোকার ছত্রাক পাচারের ছক কষা হয়েছিল। এই শুঁয়োপোকা মূলত সিকিম বা হিমালয়ের উচ্চ পর্বতশৃঙ্গের জঙ্গলে পাওয়া যায়। এই পাচারের ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’