ধৃত: কানাই বেসরা। নিজস্ব চিত্র
এক আদিবাসী মহিলার মুণ্ড কেটে খুনের ঘটনায় তাঁর এক আত্মীয়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে হেমতাবাদের আদিবাসীপাড়া থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম কানাই বেসরা। সে এলাকায় প্রকাশ নামে পরিচিত। বাড়ি ইটাহারের সরাইদিঘি এলাকায়। পেশায় দিনমজুর কানাই নিহতের ভাসুরের ছেলে।
সোমবার তাকে রায়গঞ্জ আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক ধৃতের চারদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি, জমি নিয়ে শরিকি বিবাদের জেরে এক বা একাধিক আত্মীয় ওই মহিলার মুণ্ড কেটে তাঁকে খুন করেছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ওই খুনের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, তা জানার চেষ্টা চলছে।
গত ২৯ মে সরাইদিঘি এলাকায় বাড়ির পাশের একটি রাস্তার ধারে মাইনো টুডু (৫০) নামে ওই আদিবাসী মহিলার কাটা মুণ্ড পড়ে থাকতে দেখেন বাসিন্দারা। ওই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মাইনোর কাটা মুণ্ডর পাশেই তাঁর শরীরের বাকি অংশটি পড়ে ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই মহিলার কাটা মুণ্ড-সহ দেহটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি, ভোজালি অথবা তরোয়াল জাতীয় ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে ওই মহিলার মাথা কেটে দেওয়া হয়েছে। ওইদিন মাইনোর মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকে তাঁর ভাসুরের ছেলে কানাই উধাও হয়ে যায়। তাতেই কানাইয়ের ভূমিকা নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে নিহতের পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে কানাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। শনিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ হেমতাবাদের আদিবাসীপাড়া এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।
ছেলে সুকুকে নিয়ে থাকতেন মাইনো। সুকু এবছর স্থানীয় একটি হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ঘটনার দিন তিনি শিলিগুড়িতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগেই এক বা একাধিক দুষ্কৃতী মাইনোর বাড়ি ঢুকে ভোজালি অথবা তরোয়াল জাতীয় ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে তাঁর মুণ্ড কেটে খুন করে। পুলিশের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের চার বিঘা জমির দখলকে কেন্দ্র করে মাইনোর সঙ্গে কানাইয়ের বিবাদ ছিল। সেই গোলমালের জেরেই মাইনোকে খুন করা হয় বলে পুলিশের দাবি। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটি উদ্ধার করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
যদিও কানাইয়ের দাবি, সে মাইনোকে খুন করেনি। তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারি এড়াতেই সে পালিয়ে গিয়েছিল।