মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবারই শিলিগুড়িতে বলেছেন, ‘‘এখন সব কাজ ফেলে ভোটার তালিকায় নাম তুলুন। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের তালিকার কাজ চলছে। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এখন সব কাজ ফেলে নামটা তুলুন। তার পর আমি আছি।’’ তার ঠিক আগেই ভোটার তালিকায় নাম তোলা ও সংশোধনের কাজে গাফিলতির অভিযোগে কড়া অবস্থান নিল প্রশাসন। আলিপুরদুয়ার জেলায় কুড়ি জন বিএলও বা বুথ লেভেল অফিসারকে শো-কজ করল প্রশাসন। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে ওই বিএলওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে আর্জি জানানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। সেই সঙ্গে ভোটার তালিকায় নাম তোলা ও সংশোধনের কাজের জন্য শনিবার ও রবিবার বুথে বুথে আয়োজিত বিশেষ শিবিরগুলিতে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে বলেও প্রশাসনের তরফে জানান হয়েছে।
অন্য জায়গার সঙ্গে আলিপুরদুয়ারেও গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে ভোটার তালিকায় নাম তোলা ও নাম সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য প্রতি শনি ও রবিবার করে জেলার সব বুথে বেলা এগারোটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত বিএলও-রা বসছেন। নতুন নাম তুলতে বা নাম সংশোধন করতে ওই দিনগুলিতে অনেকেই বুথে বুথে ভিড় জমাচ্ছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মতে, ভোটার তালিকায় নাম তোলা বা ভুল সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রতিবারই কিছু মানুষের গড়িমসি মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এনআরসি আতঙ্কের জেরে এ বার তাঁরাও বিশেষ শিবিরগুলিতে ভিড় জমাচ্ছেন।
কিন্তু আলিপুরদুয়ার জেলায় শাসকদল তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, জেলার বেশ কিছু বুথে সঠিক কাগজ-পত্র নিয়ে যাওয়ার পরও ভোটার তালিকায় নাম তোলা বা সংশোধনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন না বিএলও-দের একাংশ। সেই সঙ্গে বিশেষ শিবিরগুলিতে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁদের অনেকে বুথে থাকছেন না বলেও অভিযোগ তুলে তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা নেতারা কমিশনের দ্বারস্থ হওয়া ও প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রতি শনিবার ও রবিবার নির্দিষ্ট সময়ে বুথগুলিতে শিবির হচ্ছে কি না, জানতে ওই দু’দিন বিভিন্ন বুথে আচমকাই পরিদর্শনে যাচ্ছেন আধিকারিকরা। এবং শাসক দলের নেতাদের তোলা অভিযোগ যে সবটা ভুল নয়, কিছু বুথে গিয়ে বিএলওদের অনুপস্থিত থাকতে দেখেই তা বুঝতে পেরেছেন তাঁরা। এই অবস্থায় নির্দিষ্ট সময়ে শিবিরে উপস্থিত না থাকার জন্য জেলায় কুড়ি জন বিএলও-কে ইতিমধ্যেই শোকজ করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। যাদের বেশিরভাগই আলিপুরদুয়ার বিধানসভার বিভিন্ন বুথের দায়িত্বে রয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজন রয়েছেন কুমারগ্রাম ও কালচিনি বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন বুথের দায়িত্বে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এধরনের ঘটনা রুখতে শনিবার ও রবিবার করে বিভিন্ন বুথে পরিদর্শন আরও বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের নির্বাচন নিবন্ধক আধিকারিক তথা মহকুমা শাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ বলেন, ‘‘পরিদর্শনে গিয়ে যেসব বুথে বিএলও-দের পাওয়া যায়নি,তাঁদের ইতিমধ্যেই শোকজ করা হয়েছে। যাদের শোকজের উত্তর সন্তোষজনক হবে না, তবে তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে আর্জি জানানো হবে।’’