মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ডুয়ার্সের বানারহাটে। ছবি: সন্দীপ পাল।
উত্তরবঙ্গের পর্যটনে বিনিয়োগ আসছে বলে জানিয়ে কাজের খোঁজে বাইরের রাজ্যে না যাওয়ার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যেই হোম-স্টে বানানোর পরামর্শ দিলেন তিনি। সোমবার জলপাইগুড়ির বানারহাটের জনসভায় পড়ুয়া এবং যুব প্রজন্মের উদ্দেশ্যে নানা পরামর্শ দেওয়ার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের ছাত্র, যুব প্রজন্ম দক্ষতার উন্নতি (স্কিল ডেভেলপমেন্ট) এখানেও হচ্ছে। আপনাদের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। অনেক শিল্প আসছে। হোম-স্টে তৈরি করুন। কত পর্যটন কেন্দ্র বানিয়েছি। আরও বানাব। পাহাড়-জঙ্গল আপনাদের গৌরব। সে কারণেই এখন সারা বিশ্বে বাংলাকে পর্যটন-গন্তব্য করেছি, এটা গৌরবের বিষয়।’’ মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান, আরও একাধিক হোটেল, পর্যটন কেন্দ্র উত্তরবঙ্গে তৈরি হবে, বহু বিদেশি পর্যটক আসবেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “অপেক্ষা করুন। ধীরে ধীরে সব করে দেব। আগে উত্তরবঙ্গে কিছুই ছিল না, এখন উত্তরবঙ্গ বলতে পারে, আমার কাছে সব কিছু আছে।”
চা বলয়ের যুবক-যুবতীরা কাজের খোঁজে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন। চা বলয়ে স্কুলছুটের হারও তুলনামূলক বেশি। ডুয়ার্স থেকে বহু পরিযায়ী শ্রমিক ভিন্ রাজ্যে যান। বাইরে গিয়ে কেউ বিপদে পড়লে রাজ্য সরকার পাশে দাঁড়ায়, সে কথাও সরকারি সভা থেকে এ দিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। চা বলয় বা ডুয়ার্স থেকে বাইরে কাজে যাওয়ার প্রবণতায় রাশ টানতেই মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বার্তা দিয়েছেন বলে মনে করছেন সরকারি আধিকারিকেরা। এ দিন সভায় পড়ুয়া এবং যুব প্রজন্মের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সভায় ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “উত্তরবঙ্গে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা পর্যটন-সহ সব শিল্পে শিল্পপতিরা বিনিয়োগ করবেন। অনেক হোম-স্টে হবে।” রাজ্য সরকারি প্রকল্প ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যদি চান বাড়িতে দোকান, প্রসাধনী, সেলুন, পাইকারি দোকান, চায়ের দোকান করতে পারেন। সেখানে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আবেদন করলে পাবেন।”
ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে বিজেপির থেকে আসন ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। বানারহাটে নতুন ব্লকও হয়েছে। ঘোষণা হয়েছে ধূপগুড়ি মহকুমা। তার পরে, মুখ্যমন্ত্রীর এটিই ছিল ধূপগুড়ি তথা বানারহাটে প্রথম সভা। জেলা তৃণমূলের প্রায় সব নেতারাই এ দিনের সভায় ছিলেন। মঞ্চের কাছে তাঁদের বসার ব্যবস্থা হয়েছিল। সরকারি অনুষ্ঠান হওয়ায় মঞ্চে ছিলেন মন্ত্রী, বিধায়ক এবং সরকারি সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে সভাস্থলে স্বাগত জানাতে জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ছাড়াও ছিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব।