আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে ফের গেল প্রাণ

গ্রামবাসীদের ডিজিটাল রেশন কার্ডের সংশোধনের কাজে শনিবার কালিয়াচক-২ ব্লকের বিডিও অফিসে গিয়েছিলেন সাত্তার। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পরে মারা যান তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মোথাবাড়ি শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

গ্রামের অনেকের মধ্যেই আতঙ্ক আর উদ্বেগ গ্রাস করছিল কয়েকদিন ধরেই। তাই পরামর্শ নিতে বিরামপুর গ্রামে সাত্তার শেখের বাড়িতে অনেকেই আসছিলেন। কারণ রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন সাত্তার। স্ত্রী রোজিনুর বিবি পঞ্চায়েতের বর্তমান সদস্য।

Advertisement

গ্রামবাসীদের ডিজিটাল রেশন কার্ডের সংশোধনের কাজে শনিবার কালিয়াচক-২ ব্লকের বিডিও অফিসে গিয়েছিলেন সাত্তার। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পরে মারা যান তিনি। পরিবারের লোকজন তাঁকে ইংরেজবাজার শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করান। রবিবার তিনি মারা যান। সোমবার তাঁর স্ত্রী জানান, এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন তাঁর স্বামীও। গ্রামের লোকজনদের সাহায্য করতেই সাত্তার গিয়েছিলেন বিডিও অফিসে। সেখানে প্রচণ্ড ভিড়, সেইসঙ্গে রোদগরম তো ছিলই। সেইসঙ্গে এনআরসির চাপে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। এদিকে, সাত্তারের স্মৃতিতে সোমবার বিকেলে রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি স্মরণসভা করেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা সাত্তার ২০০৮ সাল থেকে দু’বার তিনি কংগ্রেসের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। গত নির্বাচনে আসনটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যায়। তখন তাঁর স্ত্রী রোজিনুর প্রার্থী হয়ে জেতেন। নির্বাচনের পরে সস্ত্রীক সাত্তার তৃণমূলে যোগ দেন।

Advertisement

বিরামপুরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সমাজসেবী হিসেবে সুনাম ছিল সাত্তারের। বিভিন্ন সামাজিক কাজে সাত্তারকে দেখা যেত। গ্রামে গ্রামে এনআরসি আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসায় বিরামপুর গ্রামের অসংখ্য বাসিন্দা ডিজিটাল রেশন কার্ড সংশোধনের ব্যাপারে সাত্তারের বাড়িতে এসেছিলেন। এই নিয়ে সাত্তার রীতিমতো চাপে ছিলেন বলে দাবি পরিবারের।

রেশন কার্ডের সংশোধনের কাজ চলছে কালিয়াচক-২ ব্লকের বিডিও অফিসে। শনিবার দুপুরে এলাকার বাসিন্দাদের রেশন কার্ডের সংশোধনের কাজ নিয়ে বিডিও অফিসে গিয়েছিলেন সাত্তার। সেই ভিড়ের মাঝেই সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর স্ত্রী রোজিনুর বলেন, ‘‘এনআরসি আতঙ্কের চাপ নিতে না পেরেই আমার স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং পরে মারা যান।’’

রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাহানারা খাতুনও বলেন, ‘‘রেশন কার্ডে নাম তোলার কাজ ব্লকে না করে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে করলে ভিড় অনেক কম হত। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা একজন সহকর্মীকে হারালাম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement