প্রতীকী ছবি।
বিজ্ঞপ্তি জারি করে ব্লকে ব্লকে রক্তদান শিবির আয়োজন করার উদ্যোগ নিল মালদহ জেলা স্বাস্থ্য দফতর। রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্লক আধিকারিকদের। তিন মাস ধরে জেলার ১৫টি ব্লকে এই কর্মসূচি চলবে। ২৪ ডিসেম্বর থেকে এই রক্তদান শিবির শুরু হয়েছে। শেষ হবে নতুন বছরের মার্চ মাসে । ইতিমধ্যে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রের নির্দেশে এই বার্তা স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের পক্ষ থেকে জেলার ১৫টি ব্লকের বিডিও'দের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি এই রক্তদান পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দফতরের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
এই প্রথম মালদহ জেলা প্রশাসন ব্লক স্তরে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে উদ্যোগী হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর থেকে হবিবপুর ব্লক দিয়ে শুরু হয়েছে প্রশাসনের স্বেচ্ছা রক্তদান শিবির। শেষ হবে আগামী ২৭ মার্চ গাজোল ব্লকে। শুক্রবার রাজর্ষি বলেন, ‘‘এর আগেও এই ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল জেলাস্তরে। কিন্তু এ বার জেলার প্রতিটি ব্লকেই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে।’’
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২০০ ইউনিটের বেশি রক্ত রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। চাঁচোল মহকুমা হাসপাতালেও প্রায় ২০০ ইউনিট রক্ত মজুত করে রাখা যায়। প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ ইউনিট রক্ত প্রয়োজন হয়। তা ছাড়া জেলাতে প্রায় ৮০০ জন থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছেন। প্রতি মাসে ২০০ জন থ্যালাসেমিয়া রোগীকে রক্ত দিতে হয়।
প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, হবিবপুর ব্লকে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত দফায় দফায় স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির করার কথা বলা হয়েছে । এছাড়াও কালিয়াচক ৩ এবং রতুয়া ১ ব্লকে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৯ মার্চ , কালিয়াচক ১ এবং ইংরেজবাজার ব্লকে ২৭ ডিসেম্বর থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত রক্তদান শিবির করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পুরাতন মালদহ, চাঁচোল১, ২, রতুয়া ২, মানিকচক, হরিশ্চন্দ্রপুর ১, ২, বামনগোলা, কালিয়াচক ২, গাজোল ব্লকে নতুন বছরের শুরুতেই স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি ব্লকে ১০ দফায় স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে । যার ফলে প্রশাসনিকভাবে মালদহের মোট ১৫টি ব্লকে ১৫০ বার স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির করতে হবে। এর ফলে মালদা মেডিকেল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সংকট কাটবে বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভাইস প্রিন্সিপাল অমিত দাঁ জানিয়েছেন, মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত সঙ্কট মেটাতে এই উদ্যোগ মূলত প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। এ রকম ভাবে যদি দফায় দফায় প্রতিটি ব্লকের রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়, তাহলে মুমূর্ষু রোগী থেকে শুরু করে থালাসেমিয়া আক্রান্তেরাও রক্ত সঙ্কটে পড়বেন না। রক্তদান আন্দোলনে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী আলমগির খান বলেন, ‘‘করোনা আবহের জন্য রক্তদান শিবির করা সম্ভব হয়নি। ফলে জেলাতে রক্ত সঙ্কট রয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে রক্তের শূন্যতা কিছুটা হলেও কমবে।’’