প্রতীকী ছবি।
সাধারণের অভাব-অভিযোগ বুঝতেই তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি। সেখানে থাকছে দলনেত্রীর বিশেষ ফোন এবং ওয়েবসাইট নম্বরও। কিন্তু সেই ওয়েবসাইটেই ব্লক কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মালদহে দলের কিছু নেতা।
শনিবার এই বিষয়টি নিয়ে দলের জেলা সভাপতি মৌসম নুরের বাড়ি কোতোয়ালি ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান কালিয়াচক-২ ব্লকের তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, ওই ব্লকে যে অস্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে তা আদতে কংগ্রেসের কমিটি। ‘দিদিকে বলো’ ওয়েবসাইটেও ওই অভিযোগই করা হয়েছে। শুক্র ও শনিবার— দু’দিনই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। কালিয়াচক-২ ও রতুয়া-১ ব্লকের নেতা-কর্মীরাই সেই বিক্ষোভে শামিল হন। এবার নয়া কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষের অভিযোগ জানানো হয় ওয়েবসাইটেও। জানা গিয়েছে, কালিয়াচক-২ ব্লক থেকেই তিন তৃণমূল নেতা সেই অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগকারী তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আসাদুল আহমেদ বলেন, ‘‘কালিয়াচক-২ ব্লকে দলের ৯ জনের যে কমিটি করা হয়েছে তা আসলে কংগ্রেসেরই কমিটি। সেই কমিটিতে কংগ্রেসের একাধিক জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। তাঁরা এখনও দলবদল করেননি। দলের কর্মীরা তা মানতে পারছেন না। আমরা এই ক্ষোভের কথাই দিদিকে বলো ওয়েবসাইটে জানিয়েছি।’’
কালিয়াচক-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কু রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘‘নয়া কমিটি গঠন নিয়ে আপত্তির কথা আমরা জেলা সভাপতিকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি। কোতোয়ালির বাড়িতেও বিক্ষোভ করা হয়। এ বার আমরা তা লিখিত ভাবে দিদিকে বলো ওয়েবসাইটে জানিয়েছি।’’ আর এক ব্লক নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমাদের ব্লকে আলোচনার মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়নি। কমিটিতে কংগ্রেসিরা ঠাঁই পেয়েছেন। আমরা পুরনোরা ব্রাত্য। এরকম হলে বিধানসভা ভোটে মারাত্মক ক্ষতি হবে। এ কথা আমি দিদিকে বলো ওয়েবসাইটে জানিয়েছি।’’ মৌসম অবশ্য বলেন, ‘‘ব্লকে ব্লকে নতুন যে কমিটি করা হয়েছে তা অস্থায়ী। এই কমিটির নেতৃত্বে অঞ্চল কমিটিগুলি গঠন করা হবে। এই কমিটি নিয়ে কিছু কর্মীদের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা মেটানো হবে।’’ তবে তিনি ‘দিদিকে বলো’ ওয়েবসাইটে এমন অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
এ দিকে, ব্লকের এই অস্থায়ী কমিটি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ যখন বাড়ছে, তখন এই কমিটিগুলির নেতৃত্বেই অঞ্চলে অঞ্চলে দলীয় কমিটি গঠন করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তা নিয়ে দ্বন্দ্ব ফের আরও চরমে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা তৃণমূলের অন্দরেই। দলের একাংশ নেতাই জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট ব্লকে অস্থায়ী কমিটিতে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা চাইবেন তাঁদেরই ঘনিষ্ঠেরা যেন অঞ্চল কমিটিতে ঠাঁই পান। ফলে বিক্ষুব্ধেরা অঞ্চল কমিটিতেও না থাকতে পারলে দ্বন্দ্ব বাড়বে বই কমবে না।