ফাইল ছবি।
বাড়ি জলে থইথই করছে। সপরিবার পাঁচ দিন ধরে পড়শির বাড়িতে রয়েছেন নব দাস। মালদহের চাঁচলের বলরামপুরের নব ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন। লকডাউন শুরুর পর থেকে বাড়িতেই রয়েছেন। করোনা-আবহে কাজ না পেয়ে একেই অনটনে দিন কাটছিল। তার উপরে বন্যা কার্যত পথে বসিয়েছে নবকে।
একই পরিস্থিতিতে ৬০ কিলোমিটার দূরের হরিশ্চন্দ্রপুরের ভাকুরিয়ার প্রভাস মণ্ডলের। বন্যায় আমন ধানের খেত, আনাজ সবই ডুবেছে। ঘরে খাবার নেই। ধুঁকছে গবাদি পশুও। মহানন্দার জলে প্লাবিত চাঁচলের নব, ফুলহারের জলে প্লাবিত হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রভাসের মতো বন্যায় সব হারিয়ে পুজোর মুখে প্রায় লক্ষাধিক বাসিন্দা পড়েছেন সঙ্কটে। কিন্তু এখনও তাঁরা কেউ ত্রাণ পাননি বলে অভিযোগ। দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে একই অভিযোগ তুলেছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক ও মালতীপুরের কংগ্রেস বিধায়ক।
চাঁচলের মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় অবশ্য বলেন, প্রশাসনের তরফে ত্রাণ বিলির কাজ চলছে। দুর্গতদের প্রত্যেকেই তা পাবেন।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, টানা পাঁচ দিন ধরে চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে মহানন্দা। রবিবার নদীর জলস্তর ছিল ২২.০৬ মিটারে। তবে কমেছে ফুলহারের জলস্তর।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, চলতি মরসুমেই ফুলহারের জলে পাঁচ বার প্লাবিত হয় হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের ইসলামপুর, দৌলতনগর, রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দটোলা, বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৫টিরও বেশি এলাকা। ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত মহকুমার দুধ ভাণ্ডার বলে পরিচিত। গবাদি পশু পালন করেই জীবিকা নির্বাহ করেন অধিকাংশ বাসিন্দা।
মহানন্দা চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে থাকায় চাঁচল ১ ও ২ ব্লকের প্রায় ২৫টিরও বেশি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
চাঁচলের নওদাপাড়ার হরকান্ত সরকার, ভাণ্ডারিয়ার কামাল হোসেন বলেন, আমন ধান, আনাজের খেত জলের তলায়। খাব কী, কী ভাবে দেনা শোধ করব জানি না। হরিশ্চন্দ্রপুরের কাওয়াডোলের বেকনি মণ্ডল বলেন, নিজেদের খাবার নেই, গবাদি পশু ধুঁকছে। প্রশাসনের কেউ এক বারের জন্যেও খোঁজ নেননি।
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক শ্রীমন্ত মিত্র বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুরের দুর্গতেরা তিন মাস ধরে একাধিক বার বন্যায় বিধ্বস্ত। কিন্তু অধিকাংশ বাসিন্দাই ত্রাণ পাননি।
মালতীপুরের বিধায়ক আলবেরুনী বলেন, চাঁচলে দুর্গতেরা সামান্যই ত্রাণ পেয়েছেন। দ্রুত যাতে সকলে ত্রাণ পান তা প্রশাসনকে জানিয়েছি।