আদালতের পথে। নিজস্ব চিত্র
“আমি দেবেনদার কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছি, তা খাতায় লেখা রয়েছে। দেবেনদার বাড়িতে ওই খাতা রয়েছে। তাঁর সঙ্গে আমি আর্থিক প্রতারণা করিনি”, শনিবার দুপুরে রায়গঞ্জ জেলা আদালতের লকআপে দাঁড়িয়ে এ কথাই দাবি করেছেন হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের (দেবেন) মৃত্যুর মূল অভিযুক্ত মাবুদ আলি। শুক্রবার বিকেলে মালদহের মোথাবাড়ি থানার পঞ্চানন্দপুর থেকে মাবুদকে গ্রেফতার করে সিআইডি। মালদহেরই চাঁচলের ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা মাবুদকে এ দিন রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের বিচারকের কাছে পেশ করে সিআইডি। সেই শুনানির আগে মাবুদ ওই কথা দাবি করেন।
সরকারি আইনজীবী পিন্টু ঘোষ বলেন, “আদালতে মাবুদকে ১০ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।” সিআইডির এক কর্তার দাবি, মাবুদকে জেরা করে দেবেন কাকে কত টাকা দিয়েছিলেন ও কারা দেবেনের টাকা তছরুপ করেছেন, তা জানার চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, “দেবেনবাবুর মৃত্যুর পরে তাঁর বাড়ি থেকে একটি খাতা উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে আর্থিক লেনদেনের হিসেব-সহ ১৫ জনের নাম মিলেছে। মাবুদ সেই খাতার কথা বলছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
গত লোকসভা ভোটের পর সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন দেবেন। ১৩ জুলাই বাড়ি থেকে প্রায় দু’কিমি দূরে বালিয়াদিঘি মোড় এলাকার দেবেনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সিআইডির দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেবেন আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর স্ত্রী চাঁদিমা পুলিশের কাছে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
চাঁদিমা দাবি করেন, দেবেন মাবুদ ও নিলয় সিংহের কাছে প্রচুর টাকা পেতেন। দেবেন অতীতে যতবার তাঁদের কাছে টাকা চাইতেন, তখনই তাঁরা তাঁকে ভয় দেখাতেন বলে দাবি। দেবেনের জামার পকেট থেকে উদ্ধার হওয়া চিরকুটেও এই দু’জনকে দায়ী করা হয় বলে সূত্রের খবর। ১৪ জুলাই ইংরেজবাজার থেকে নিলয়কে গ্রেফতার করে সিআইডি। চাঁদিমার অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি নিলয় ও মাবুদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে। এখন তারই তদন্ত চলছে।