ফেরা: কোচবিহারের সার্কিট হাউসে রাজকুমারী উত্তরাদেবী। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
শৈশবের শহরে এসে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন কোচবিহারের রাজকন্যা উত্তরাদেবী। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ কোচবিহার সার্কিট হাউসে পৌঁছন তিনি। প্রায় পাঁচ বছরের মাথায় নিজের শহরে এলেন ‘ঘরের মেয়ে’ তথা রাজস্থানের কোটার মহারানি। উত্তরাদেবীর এই সফর ঘিরে শহরে উৎসাহ তৈরি হয়েছে। এ দিন সার্কিট হাউসে উত্তরা দেবী পৌছনোর আগেই কৌতূহলী বাসিন্দাদের অনেকেই খোঁজখবর শুরু করেন। সার্কিট হাউসে বসেই রাজকন্যা বলেন, ‘‘কোচবিহারে ফিরে আসতে সবসময়েই ভাল লাগে। অনেক সুখ-দুঃখের স্মৃতি রয়েছে এ শহরে।’’
উত্তরা দেবীর সঙ্গে এসেছেন তাঁর মেয়ে, বর্ধমানের রাজপরিবারের যুবরানি ভবানীকুমারীও। আজ, শুক্রবার কোচবিহারের রাজবাড়ি যাওয়ার কথা তাঁদের। মদনমোহন মন্দিরে গিয়ে পুজোও দিতে পারেন রাজকন্যা। রাতে শহর লাগোয়া খাগরাবাড়ি এলাকার বুড়িরপাটে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা তাঁদের। কোচবিহার হেরিটেজ কমিটির সদস্য নিরুপম ঘোষ বলেন, “আমার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে উত্তরা দেবীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। সেজন্যেই কোচবিহারে এসেছেন তিনি। উনি আসায় খুব ভাল লাগছে।”
উত্তরাদেবী সম্পর্কে কোচবিহারের রাজকন্যা তথা জয়পুরের মহারানি গায়ত্রীদেবীর ভাইঝি। উত্তরা দেবীর বাবা ইন্দ্রজিৎ নারায়ণ ছিলেন গায়ত্রী দেবী ও কোচবিহারের মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণের ভাই। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দাদের কথায়, কোচবিহার রাজবাড়িতে শৈশবের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে উত্তরাদেবীর। ১৯৬৪ সালে মুম্বইয়ে কোটার মহারাজার সঙ্গে উত্তরাদেবীর বিয়ে হয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে কোচবিহারে বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। সেবার রাজবাড়ি ঘুরে দেখেন তিনি। এবারের সফর সেরে শনিবার ফেরার কথা তাঁর।
রাজকন্যা উত্তরাদেবীর ‘ঘরে ফেরা’র খবরে খুশি কোচবিহারের বাসিন্দাদের অনেকেই। কোচবিহারের প্রবীণ বাসিন্দা নৃপেন পাল বলেন, “আগেরবার যখন এসেছিলেন তখন উত্তরাদেবীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। এবারেও উনি আসায় আমরা আনন্দিত। সুযোগ পেলে দেখা করব।”
দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের অধীন মদনমোহন মন্দিরের এক কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তীও বলেন, “উত্তরাদেবীকে দেখার জন্য অপেক্ষায় আছি। শুনলাম, মদনমোহন মন্দিরেও পুজো দিতে আসবেন।”