দূষিত: মহানন্দা নদীর ঘাট। নিজস্ব চিত্র
নদীর ঘাটে কোথাও পড়ে রয়েছে ফুল বা কলাগাছ। কোথাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জরি, রঙিন কাগজ। নদীর পাড়েও একই ছবি। চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে প্লাস্টিক বা কা়গজের চায়ের কাপ। শুক্রবার সাত সকালে ছটপুজো শেষ হওয়ার পরে উত্তরবঙ্গের নানা জায়গায় দেখা গিয়েছে এমনই ছবি।
এ দিন সকাল থেকেই শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির নদীঘাটগুলোতে ছড়িয়ে ছিল ফুল, চায়ের কাপ। পরে দুই পুরসভার তরফেই ঘাটের সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়। বিকেলের দিকে কিছুটা পরিষ্কার হয় নদীঘাট। শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, সকালে পুজো শেষ হয়েছে। নদীঘাটের ধারে প্যান্ডেল খুলতে দুপুর গড়িয়েছে। পুরসভা ও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আজ, শনিবার থেকে নতুন করে বিভিন্ন ঘাট এলাকা পরিষ্কার করা হবে। সকালের দিকে অবশ্য মহানন্দা নদী দিয়ে ফুল, কলাগাছের পাতা থেকে শুরু করে নারকেলও ভেসে যেতে দেখা গিয়েছে৷ একই ছবি করলা নদীরও। সকালের দিকে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরাও শিলিগুড়ির মহানন্দা ঘাট সাফাই করেছেন।
শিলিগুড়ির ৪৫টি ঘাটে ছটপুজো হয়েছে। এ বার গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশে শিলিগুড়িতে নদীর মধ্যে কোথাও বাঁশ, বালির বস্তা দিয়ে ঘাট তৈরি হয়নি। কোনও অস্থায়ী সেতুও হয়নি। বিভিন্ন এলাকায় নদীর পাড় জুড়ে তৈরি হয়েছিল সুদৃশ্য ছটঘাট ও মণ্ডপ। শহরের ৫টি এলাকায় ফাঁকা মাঠে পুকুর খুঁড়ে ছটপুজো হয়েছে। সব জায়গা এখনও পরিষ্কার হয়নি। টানা ক’দিন সাফাইয়ের কাজ চলবে বলে জানিয়েছেন মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) মুকুল সেনগুপ্ত।
জলপাইগুড়ি শহরের ১৪টি ঘাটে ছট পুজো হয়েছে৷ এর বাইরেও আরও বেশ কিছু জায়গায় ছট পুজোর আয়োজন হয়৷ কিন্তু পুজো শেষ হতেই দেখা যায় প্রায় সব ঘাটেই ফুল, কলাগাছ-সহ বিভিন্ন জিনিস ভরে রয়েছে৷ প্যান্ডেলের বাঁশও পড়ে রয়েছে অনেক জায়গায়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ছট পুজো শেষ হওয়ার পর এ দিন তিনটি নৌকাতে করলায় ভেসে থাকা ফুল, কলাগাছের পাতা পরিষ্কার করেন পুরকর্মীরা৷ প্রায় বিকেল পর্যন্ত চলে সেই কাজ। সকাল থেকেই কিং সাহেবের ঘাট, বাবুঘাট ও সমাজপাড়া ঘাটেও সাফাইয়ের কাজে নামেন পুরকর্মীরা৷ তবে এ দিন মাত্র ১৫জন কর্মী থাকায় বেশিরভাগ জায়গায় সেভাবে সাফাই হয়নি বলে জানিয়েছে খোদ পুরসভা কর্তৃপক্ষ। জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, ‘‘সাফাইকর্মীদের একটা বড় অংশ নিজেরা ছট পুজোয় সামিল হয়েছিলেন৷ ফলে তাঁদের পক্ষে এ দিন কাজে যোগ দেওয়া যে সম্ভব হবেনা সেটাই স্বাভাবিক৷’’ তিন-চারদিনের মধ্যেই সব পরিষ্কার করে ফেলা হবে বলে তাঁর আশ্বাস।
পুজোর পরে ঘাটের একই ছবি ছিল কোচবিহারেও। কোচবিহারের তোর্সার পাড় থেকে সাগরদিঘি পাড়ের একাংশ জুড়ে পড়েছিল নানা আবর্জনা।