মাসখানেক ধরে টানা বিসর্জন, আচার-উপাচারের ‘ধকলে’র পরে, এ বার মহানন্দার নাব্যতা ফেরাতে উদ্যোগ হোক, দাবি তুলেছে শিলিগুড়ি।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সমীক্ষা রিপোর্টে, উত্তরবঙ্গের নদীগুলির মধ্যে মহানন্দার পরিস্থিতি বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতেই নদীর জলে বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিকের উপস্থিতি পেয়ে, পর্ষদ জানিয়েছিল নদীর জলে স্নান তো দূরের কথা হাত-পা ছোঁয়ালেই চর্মরোগ হতে পারে। তার পরেও নদীর নাব্যতা ফেরেনি। তার উপর দুর্গাপুজো, কালীপুজোর বিসর্জনের পরে নদীর জলে কাঠামো থেকে, মাটি, রাসায়নিক রং। জলের ওপর থেকে কিছু তুলে ফেলা হলেও, নদীগর্ভে সব সঞ্চিত হয়ে নাব্যতা কমিয়েছে বলে অভিযোগ। সোমবার সকালে শেষ হয়েছে ছটপুজো।
এ দিন সকালের পর থেকে পুরসভা মহানন্দার বিভিন্ন ঘাট পরিষ্কার করা শুরু করলেও, এ দিন দুপুরেও লালমোহন মৌলিক ঘাট, সূর্যসেন পার্ক লাগোয়া ঘাট, ভানুনগর, বাঘাযতীন কলোনি লাগোয়া ঘাটে নদীতে কলাগাছ, বাসি ফুলের মালা, ঝুড়ি পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। নদীর গতি আটকে বালির বস্তা ফেলে তৈরি কৃত্রিম ঘাট এখনও সরানো হয়নি। পুরসভার দাবি, একসঙ্গে সব ঘাটে সাফাই সম্ভব নয়। সকালের পর সব ঘাটেই একপ্রস্ত করে সাফাই হয়েছে। এক-দু’দিনের মধ্যে সব ঘাট সাফসুতরো হয়ে যাবে বলে দাবি করেছে পুরসভা।
পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘নদী সাফাই রাখা শুধু এক-দুদিনের কাজ নয়। প্রতিদিন নজরদারি চালাতে হবে।’’ মহানন্দা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও জারি রয়েছে। সোমবার শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘‘পুরসভা মহানন্দা নিয়ে কতটা আন্তরিক তা প্রশ্নই রয়েছে। বাসিন্দারা নিজেরা নদী পরিষ্কার না করলে এ বারে ছট পুজো করাই সম্ভব হতো না।’’ পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের থেকে সাহায্য চেয়েও মহানন্দা সংস্কারে পুরসভা সাহায্য পায়নি।’’ ফুল-পাতা সাফাই নয়, নদীর নাব্যতা ফেরাতে কবে পদক্ষেপ করা হবে সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে শিলিগুড়ি।