সংবাদমাধ্যমে আগামী কিছু দিন মুখ খুলবেন না মদন।
শুধু কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন করা হলেই মিলবে উত্তর। বড়জোর জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে, ‘‘আপনি কেমন আছেন?’’ তার বাইরে অন্য কোনও বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সংবাদমাধ্যমে তিনি কোনও জবাব দেবেন না। দলীয় নির্দেশ মেনে এই সিদ্ধান্ত নিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, নির্দিষ্ট কোনও বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে আগামী কিছু দিন মুখ খুলবেন না তিনি। তার জন্য সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে তাঁর আর্জি, ‘‘আপনারা আমায় ভুল বুঝবেন না।’’
রবিবার একটি ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটির বিধায়ক মদন বলেন, ‘‘আমি আমার রাজনৈতিক দলের নামে শপথ করছি, কোনও কর্মসূচির বিষয় ছাড়া সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে অন্য কোনও বিষয়ে কথা বলব না।’’ সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আমায় যদি জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি কেমন আছেন?’ আমি তার উত্তর দেব। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনও বিষয়ে আমি বাইট দেব না। যা বলার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউবে বলব। সাংবাদিক বন্ধুদের বলছি, আপনারা আমায় ভুল বুঝবেন না। আপনাদের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। শুধু আমার কাছে এসে বুম ধরে বলবেন না, ‘এই বিষয় নিয়ে কিছু বলুন’।’’
কিন্তু হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন মদন? তিনি বললেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদে আর তৃণমূলের দয়ায় আমি অনেক প্রচার পেয়েছি। এতই প্রচার পেয়েছি যে, কিছু না করলেও আগামী পাঁচ বছর বাংলার মানুষ আমায় মনে রাখবেন। আমার আর কোনও প্রচারের প্রয়োজন নেই। আমি দলের নির্দেশ মেনে চলব।’’
শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ, গরু-কয়লা পাচার নিয়ে মামলায় জেরবার তৃণমূল। শিক্ষাক্ষেত্রে ‘কেলেঙ্কারি’র অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং গরু পাচার-কাণ্ডে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ায় তীব্র অস্বস্তিতে শাসক দল। সূত্রের খবর, এমন পরিস্থিতিতে মদনের সাম্প্রতিক কোনও মন্তব্যে দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। তার জেরেই দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির তরফে মদনকে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকের মত, মদনের কথাতেও তার ইঙ্গিত মিলেছে।
ভিডিয়ো বার্তায় মদন বলেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে আমি কিছু বলব না। ওটা বিচারাধীন বিষয়। শুধু এটুকু বলতে চাই, এঁদের সঙ্গে আমার দীর্ঘ দিনের পরিচয় এবং হৃদ্যতা রয়েছে। এঁদের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করে কাউকে আঘাত করার কোনও মানসিকতা ছিল না। কিন্তু যাই হোক, আমার কোনও বিবৃতি নিয়ে অভিযোগ, পার্থ ও অনুব্রতকে নিয়ে কথা বলে আমি দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছি। আমার এ রকম কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।’’
তাঁর মন্তব্য নিয়ে কাটাছেঁড়ার জন্য সংবাদমাধ্যমকে দোষ দিতে রাজি নন মদন। তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনও সাংবাদিককে দোষ দেব না। আমি শুধু বলতে চাই, কিছু দিনের জন্য সংবাদমাধ্যমের বাইরে থাকতে দিন আমায়। তবে আমার কর্মসূচিতে আসুন। ’’