কেনাকাটা: ইদের বাজার করতে ভিড়। মালদহে। নিজস্ব চিত্র
হাতে আর মাত্র তিন-চার দিন। তার পরেই খুশির ইদ। এই স্লগওভারে মালদহে ইদের বাজার জমজমাট। মল থেকে শুরু করে আটপৌরে বস্ত্রালয় সর্বত্রই ভিড়। বিকোচ্ছে বাহুবলী-টু শাড়ি থেকে বাহুবলী চুড়িদার। পাল্লা দিয়ে চলছে বাজিরাও মস্তানি চুড়িদারও আর কচিকাঁচাদের ড্যামেজড জিন্স। সমান ভিড় জুতোর দোকানেও। সেখানে এ বার বাজিমাত করছে মহিলাদের মিসড কল চটি।
হাতে আর সময় না থাকায় জেলা সদরের বিভিন্ন মল ও বস্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভিড় উপচে পড়ছে। কালিয়াচকের বালিয়াডাঙা মোড় থেকে ইদের বাজার করতে দাদির সঙ্গে এসেছেন এক তরুণী। ইংরেজবাজার শহরের দেশবন্ধু মার্কেটের একটি অভিজাত বস্ত্রপ্রতিষ্ঠানে ঢোকার মুখেই দাদিকে ওই তরুণী ফতেমার আবদার, ‘‘ও দাদি, আমি কিন্তু বাহুবলী নেব!’’ মুখের কথা শেষ না হতেই ধমকে ওঠেন দাদি। বলেন, ‘‘এসেছি ইদের বাজার করতে। এখানে আবার সিনেমা দেখার কথা আসছে কী ভাবে?’’ পরিস্থিতি আঁচ করেই সামনেই দাঁড়ানো প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার দেবাশিস কুণ্ডু বলেন, ‘‘ও চাচি, আপনার নাতনি সিনেমার কথা বলছে না। আসুন, বাহুবলী আমাদের কাছেই রয়েছে।’’ এই বলে দোকানের এক কর্মচারীকে দোতলায় মেয়েদের চুড়িদারের কাউন্টারে নিয়ে যেতে বললেন তিনি। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘এ বার অল্পবয়সী মেয়েদের মধ্যে বাহুবলী চুড়িদারের চাহিদা মারাত্মক। বাজিরাও মস্তানি চুড়িদারও সমান বিক্রি হচ্ছে।’’
কাছেই বিএস রোডে রয়েছে পুরনো একটি বস্ত্র প্রতিষ্ঠান। সেখানে সেই আগের মতোই বসে শাড়ি কেনার চল রয়েছে। আটপৌরে সেই দোকানে শাড়ি কিনতে ঢোকেন সামসির রেজিনা বিবি। কয়েকটি তাঁত ও সিল্কের শাড়ি দেখার পরই তিনি বলছেন, ‘‘আরে এসব তো আগে অনেক নিয়েছি। বাহুবলী-টু দেখান।’’ দোকানের কর্মী আর দেরি না করে বের করলেন সেই শাড়ি। বেশি দেখাতে হয়নি, দু’টো দেখার পরই একটি কিনে নিলেন রেজিনা বিবি। ওই কর্মী রতন দাস বলেন, ‘‘এ বার ইদে বাহুবলী-টু শাড়ির ব্যাপক চাহিদা। যত মহিলা কেনাকাটা করতে আসছেন তাঁরা বেশির ভাগই ওই শাড়ি চাইছেন। এ বারও চেন্নাই এক্সপ্রেস লুঙ্গি বিকোচ্ছে ভাল।’’
শহরের মলে যদিও এই সব ‘নাম-করা’ শাড়ি বা জামাকাপড় মিলছে না। এ দিন রবীন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের একটি মলে দুপুরে তিলধারণের জায়গা ছিল না। সেখানকার ম্যানেজার নীলেশ্বর অগ্রবাল বলেন, ‘‘আমাদের স্টক প্রচুর। বাহুবলী বা অন্য নামে আমরা কিছু বিক্রি করছি না। কিন্তু মানুষ সে সবই পছন্দ করছেন।’’
শুধু কি পোশাক? নামে কম যায় না জুতোও। এ বার ইদের বাজারে মেয়েদের কাছে জনপ্রিয় মিসড কল চটি। নেতাজি মার্কেটের এক জুতো ব্যবসায়ী রাজু আখতার বলেন, ‘‘চাহিদা হতে পারে বুঝে এ বার কলকাতা থেকে আগেই বেশি করে মিসড কল চটি তুলেছিলাম। দারুণ চাহিদা রয়েছে এ বার।’’