পথে: কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে রোড-শো তে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। বুধবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
আড়াই মাস পরে বাড়ির গ্রামে ফিরলেন বিজেপির কোচবিহার লোকসভা আসনের প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। বুধবার রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে তিনি কোচবিহার শহর থেকে তাঁর গ্রামের বাড়ি ভেটাগুড়ির উদ্দেশে রওনা হন। বাজি পুড়িয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নিশীথকে স্বাগত জানান তাঁর অনুগামীরা। তৃণমূল অভিযোগ করেছে, নির্বাচনী বিধি ভেঙে প্রায় ৩০টি গাড়ির কনভয় নিয়ে বিজেপি প্রার্থী ভেটাগুড়ি গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, অনুমতি ছাড়াই একাধিক জায়গায় লোক জমায়েত করেছেন। ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল।
নিশীথ বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমার সঙ্গে দু’টি গাড়ি ছিল আর রূপাদির সঙ্গে দু’টো গাড়ি ছিল। আর রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে সাধারণ মানুষ কথা বলেছেন। এর বাইরে কিছু হয়নি।” তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষের উন্মাদনা দেখে তৃণমূল মিথ্যে অভিযোগ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা কিন্তু জানাচ্ছেন, গাড়ির সংখ্যা অনেকই ছিল। তৃণমূলের কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি খোকন মিয়াঁ বলেন, “অনুমতি না নিয়ে একাধিক জায়গায় লোক জমায়েত করা হয়। সেই সঙ্গে বিধি ভেঙে অনেকগুলি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে সাধারণ মানুষকে অসুবিধেয় ফেলেছেন বিজেপি প্রার্থী। যানজট তৈরি হয়েছে রাস্তায়। আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি।” কোচবিহার ১ ব্লকের বিডিও গঙ্গা ছেত্রী বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই ওই বিষয়ে খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে ওই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নিশীথের বিরুদ্ধে চুরি-ডাকাতি থেকে শুরু করে খুনের চেষ্টা এবং আগ্নেয়াস্ত্র রাখার ধারায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিন মাস আগেই যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলার দাপুটে নেতা ছিলেন তিনি। ৭ ডিসেম্বর দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। এর পরেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। তৃণমূলে থাকার সময়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে একাধিক বার নিশীথের বাড়ি ভাঙচুর হয়। ওই সময় তিনি এলাকা ছাড়া ছিলেন। বহিষ্কারের পরে ফের এলাকা ছাড়া হন নিশীথ।
২৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। তার একদিন পরেই জেলায় ফেরেন নিশীথ। তাঁর অবশ্য কোচবিহার শহরে হাজরাপাড়া মোড়ের কাছে একটি ভাড়া বাড়ি রয়েছে। বর্তমানে সেখানেই তিনি পরিবার সহ রয়েছেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তিনি কবে ভেটাগুড়ি ফিরবেন, তা নিয়ে জল্পনা ছিল। বুধবার ফেরার সময় তাঁর সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীরা ছিলেন। তাঁর বাড়িতেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তারক্ষীরা রয়েছেন।
নিশীথ বলেন, “মানুষের যে উন্মাদনা দেখলাম। তাতে আমি সত্যি আপ্লুত।” তৃণমূলের নুর আলম হোসেন বলেন, “ভিড় হয়নি। নানা প্রলোভন দেখিয়ে সামান্য কয়েক জনকে নিয়ে গিয়েছিল বিজেপি।’’