মিছিলে: বিনয়। নিজস্ব চিত্র
বিমল গুরুং শিবিরের সঙ্গে জিএনএলএফ, সিপিআরএম এবং আরও কয়েকটি দল জোট বেঁধেছে। তাদের সমর্থন করছে বিজেপি। ফলে এখন পাহাড়ে যে কঠিন লড়াই, সেটা ভাল ভাবেই জানেন বিনয় তামাং এবং তাঁর সঙ্গীরা। এই পরিস্থিতিতে দার্জিলিং কেন্দ্রের উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রধান ভরসা হিসেবে মনে করছেন বিনয়। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে হাতিয়ার করেই পাহাড়ে ভোট প্রচার শুরু করেন তিনি। শুক্রবার দার্জিলিঙে মহকুমাশাসক তথা মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিনয়। সেখান থেকে বের হয়ে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের দার্জিলিং গড়তে কাজ করতে চাই।’’
এ দিন দার্জিলিং স্টেশন থেকে বিশাল মিছিল করে মনোনয়ন জমা দেন বিনয়। প্রথম সারিতে তাঁর সঙ্গে হাত ধরাধরি করে ছিলেন তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি এলবি রাই, পাহাড়ের তৃণমূল নেতা এনবি খাওয়াস, তৃণমূল সাংসদ শান্তা ছেত্রী। অনীত থাপা-সহ বিনয়পন্থী মোর্চা নেতারা ছিলেন দ্বিতীয় সারিতে। পাহাড় সূত্রেই বলা হচ্ছে, মহকুমাশাসকের দফতরের ভিতরেও বিনয়ের সঙ্গে ছিলেন বেশির ভাগ তৃণমূল নেতা। আপনাদের প্রার্থী, আপনারা কেন পিছনের সারিতে? মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের উত্তর, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তিকে সামনে না রাখলে লড়াই কঠিন হবে। পাট্টা হোক বা পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান— যে সব প্রতিশ্রুতি আমরা দিচ্ছি, কোনওটিই মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা ছাড়া সম্ভব নয়।’’
মোর্চা নেতাদের একাংশ বলছেন, দু-তিন মাস পরপর পাহাড়ে আসায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘নিজেদের মানুষ’ ভাবতে শুরু করেছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি যে ভাবে কাজ করেছেন, তাতে ঘোরতর বিরোধীরাও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন। তাদের জমি সমস্যা মিটিয়ে পাট্টা দেওয়ার জন্য এর মধ্যেই দু’টি সরকারি কমিটি তৈরি হয়েছে। ফলে খুশি পাহাড়ের বাসিন্দারা। এই সব কারণে পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রীর গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে, মত মোর্চা নেতাদের। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা বলেন, ‘‘কথা দিয়ে কথা রাখায় মুখ্যমন্ত্রীকে ভরসা করছেন সাধারণ পাহাড়বাসীও। তাই রাজনীতি-নিরপেক্ষ পাহাড়বাসীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তাঁর।’’
বিনয়ের বিরোধী জোট শিবিরকে সাহায্য করছে বিজেপি। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্য ছাড়া তাদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া বিনয়ের একার পক্ষে সম্ভব নয়। বিনয় নিজেও বলেন, ‘‘কেন্দ্রের সরকারি ক্ষমতাকে ব্যবহার করে পাহাড় দখল করতে চাইছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী তা হতে দেবেন না। আমরা তাঁর পাশে থেকে লড়াই করব। পাহাড়ে জিটিএতে আমাদের সদস্যরা থাকবেন, আমি কলকাতায় থাকব, আর অমর সিংহ রাই থাকবেন দিল্লিতে। পাহাড়ের উন্নয়নে ত্রিমুখী পরিকল্পনায় কাজ হবে এ বার।’’ এলবি রাই বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীই এখন পাহাড়ের মুখ। বিনয়ের মাধ্যমে মানুষ তাঁকেই ভোট দেবে।’’