জাতীয় সড়কে লাঠি। নিজস্ব চিত্র
গঙ্গারামপুরের নির্যাতিতা নিহত তরুণীর পরিবারের সঙ্গে শুক্রবার দেখা করলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি, এ দিনও ওই তরুণীর ধর্ষণ ও খুন-কাণ্ডে মূল অভিযুক্তের চরম শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে গঙ্গারামপুরে। দুপুরে স্থানীয় মহারাজপুরে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাদের দাবি, অবিলম্বে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। সংগঠনের অভিযোগ, পুলিশ তাদের সমর্থকদের উপর অহেতুক লাঠিচার্জ করেছে।
শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ তরুণীর বাড়িতে যান তিনি। ওই তরুণীর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন লকেট। প্রয়োজনে ওই পরিবারকে সবরকম আইনি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন। এ দিন ঘণ্টাখানেক ছিলেন সাংসদ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি সভাপতি শুভেন্দু সরকারও। সেখান থেকে বেরিয়ে এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন লকেট। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার পরে পাঁচ দিন কেটে গেলেও প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে এই ভাবে মেয়েদের ধর্ষিত হতে হচ্ছে। এটাই কি আপনার কন্যাশ্রী?’’ এ দিন লকেটের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে শুধু একটি কথাই বলেন নির্যাতিতার মা। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মেয়েকে ওরা খুব কষ্ট দিয়ে মেরেছে। ওদের যেন ফাঁসি হয়।’’
পরিবারের কথায় জানা গেল, শারীরিক অসুস্থার কারণে গঙ্গারামপুরের কালদিঘিতে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। সেখানেই অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে পরিচয়। মাঝেমধ্যেই চিকিৎসার কারণে ওই সেন্টারে যাতায়াত করতে হতো তাঁকে। এইভাবেই দু’জনের মধ্যে ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে ফোনে কথাও হতো বলে নির্যাতিতার বাবার দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ওষুধের দোকানে যাতায়াত করার সুবাদে ভাল সম্পর্ক হয়েছিল ওর সঙ্গে। কিন্তু এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যেভাবে আমার মেয়েকে খুন করা হল, আমি আর কিছুই ভাবতে পারছি না। শুধু প্রশাসনের কাছে বলব ওদের যেন ফাঁসি হয়।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, মূল অভিযুক্ত যুবককে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় যুক্ত আরও এক যুবককে গ্রেফতার করা হয় বৃহস্পতিবার রাতে। খুনের সময় সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল বলে মূল অভিযুক্ত জানিয়েছে। শুক্রবার ধৃত দু’জনকেই গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।