সতর্ক: পাহাড়গামী প্রতিটি গাড়ি এ ভাবে রোজ স্যানিটাইজ় করার কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র
করোনা মোকাবিলায় গোড়া থেকে পাহাড়ে কাজ শুরু হয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বার দার্জিলিং ও কালিম্পঙের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর আরও উন্নতির কথা ভাবছেন পাহাড়ের ১৪টি জনজাতি বোর্ডের কো-অর্ডিনেশন কমিটির কর্তারা। পাহাড়ের হাসপাতালগুলিতে শয্যা, ভেন্টিলেটর বাড়ানোর পাশাপাশি ভাইরোলজি ল্যাবরেটরি তৈরি প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা। এই বিষয়ে শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, পাহাড় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়নি। এই ধারা বজায় রাখতে সচেতনতা এবং আরও ভাল স্বাস্থ্য পরিকাঠামো জরুরি।
কো-অর্ডিনেশন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক তথা নেওয়ার জনজাতি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুনীল প্রধান বলেন, ‘‘আমরা ১৪টি বোর্ডের চেয়ারম্যানেরা বৈঠকে বসে কাজের রূপরেখা তৈরি করি। একাধিক কাজ হয়েছে। আবার বৈঠক করব। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আরও বাড়ানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ত্রিবেনীতে পাহাড়ের প্রথম করোনা হাসপাতাল চালু হচ্ছে। কিন্তু করোনার পরীক্ষার জন্য পাহাড় এখনও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ল্যাবরেটরির উপর নির্ভরশীল। পাহাড় থেকে ল্যাবে লালারসের নমুনা পৌঁছতেই ৩-৪ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আবার পরে রিপোর্ট নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলও উত্তরবঙ্গে সফরে এসে বিষয়টি চিহ্নিত করেছেন। তাঁরা মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়ে পাহাড়ের জন্য আলাদা টেস্ট সেন্টার করার পরামর্শ দিয়েছেন। শেরপা, মঙ্গর বা তামাং বোর্ডের বেশ কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন, পাহাড়ের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আরও ভাল করার কথা বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনায় উঠে আসছে। টয় ট্রেন দুর্ঘটনায় এক পর্যটকের মৃত্যুর পর তা আরও স্পষ্ট হয়। মূলত টেস্ট, পরীক্ষা নিরীক্ষা, ভেন্টিলেটর, পর্যাপ্ত আইসিইউ-সিসিইউ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। করোনা যুদ্ধে নেমে পরিকাঠামোর এমন অনেক সমস্যা সামনে আসছে। এসবই মেটানোর জন্য বোর্ডগুলি মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তাভাবনা করেছে।
জনজাতির উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার পাহাড়ে ১৪টি জনজাতির আলাদা আলাদা বোর্ড গড়েছে। সব বোর্ডকে মিলিয়ে তৈরি হয়েছে কো-অর্ডিনেশন কমিটি। এই কমিটির মাধ্যমেই করানো মোকাবিলার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই পাহাড়ে সচেতনতার কাজ হয়েছে। এখন পাহাড়ে ওঠার আগে শিমূলবাড়ির রোহিণী গেট এবং মিরিকের লোহাপুলের কাছে দু’টি চেক পয়েন্টে সমস্ত গাড়ি স্যানিটাইজ় করা হয়েছে। লকডাউন ওঠার পরেও ওই ব্যবস্থা চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন কমিটির কর্তারা।