শহরে ফ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র।
হিলি থেকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে মেঘালয়ের তুরা পর্যন্ত যোগাযোগের রাস্তা সম্প্রতি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আলোচ্য বিষয় হয়েছে। তাতে আশান্বিত দক্ষিণ দিনাজপুরের ‘জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ফর করিডর।’ প্রস্তাবিত ওই যোগাযোগপথের বিষয়টি সার্ক সম্মেলনে আলোচনা চেয়ে নতুন করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার বালুরঘাট পুরসভার হলে একটি বৈঠকে এরকমই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। দলমত নির্বিশেষে ওই কমিটিই ২০১৩ সাল থেকে প্রস্তাবিত ওই করিডরের দাবি তুলে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি বিজেপির বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার নিজের ছবি দিয়ে ওই প্রকল্পের প্রচার শুরু করেছেন। তাতে ক্ষুব্ধ কমিটির একটি অংশ। তাঁদের দাবি, কৃতিত্বের দাবি কেউ করতেই পারেন, কিন্তু আলাদা করে এসব না করে ব্যানারেই যৌথ প্রচার হতেই পারত।
বালুরঘাটের হিলি থেকে মেঘালয়ের মধ্যে যাতায়াত স্বাধীনতার আগে চালু ছিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে সেই পথ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু পর্যটন, বাণিজ্য এবং প্রচুর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কমিটির সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে প্রায় এক দশক আগে থেকে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন বলে দাবি। প্রস্তাবিত ওই রাস্তা মাত্র ৮৬ কিলোমিটার। বর্তমানে বালুরঘাট থেকে মেঘালয় যেতে প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। একই সমস্যা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, রংপুরের মত কয়েকটি এলাকার মানুষের। কমিটির আহ্বায়ক নবকুমার দাস বলেন, ‘‘আমাদের লাগাতার আন্দোলনের জেরেই প্রস্তাবটি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বৈঠকে স্থান পেয়েছে। আমরা চাই সকলে আমাদের সঙ্গেই আসুক। আলাদা করে নয়।’’
গত ১৭ ডিসেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে ঐতিহাসিক রুট নতুন করে খোলার আলোচনায় স্থান পেয়েছে প্রকল্পটি। তারপরে এই প্রথম বৈঠক করল কমিটি। দ্রুত প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত সার্ক সম্মেলনে বিষয়টি যাতে আরও ভালভাবে আলোচনায় স্থান পায়, তার দাবি জানানো হবে বলে জানান তাঁরা। একই সঙ্গে কমিটির সদস্যরা রাস্তায় নেমে স্ট্রিট কর্নার করে প্রকল্পের পিছনে নিজেদের খাটুনির কথা মানুষকে জানাবেন বলেও ঠিক করেছেন।
দুই রাষ্ট্রপ্রধানদের বৈঠকের পরই বিজেপির সাংসদ সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে চিঠি দিয়েছিলেন। শহরের বেশ কিছু জায়গায় তার প্রচার পোস্টারও পড়েছে। বিজেপির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তা নিয়ে প্রচারেও নেমেছে। ব্যাপারটিকে ‘ঘোলাজলে মাছ ধরা’ বলেই দাবি করছেন কমিটির অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘ওরা আগে খেকে কাজ করছে ঠিকই কিন্তু আমিও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি।’’