প্রতীকী ছবি।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর অনেক জায়গাতেই ৩০ শতাংশের মতো স্বাস্থ্যকর্মীদের এখনও প্রতিষেধক নেননি বা তাঁদের দেওয়া সম্ভব হয়নি। নথিভুক্ত হওয়ার পরেও যাঁরা নেননি, আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাঁদের নিয়ে নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় পরে প্রতিষেধক নিতে চাইলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁদের মতো করেই টিকা নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তাই শেষ মুহূর্তে প্রতিষেধক দেওয়ার তোড়জোড় চলছে জেলাগুলোয়। সেই মতো বুধবার অনেকেই প্রতিষেধক নিয়েছেন বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের।
সামনেই বিধানসভা ভোট। করোনা পরিস্থিতির কারণে ভোটের কাজেও চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের এ বার বাড়তি দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। ভোটের আবহে স্বাস্থ্য পরিস্থিতির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ রাজ্যে ভোটের কাজে যুক্ত সমস্ত কর্মী-আধিকারিক, নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে রাজ্যের সাধারণ মানুষকেও বিনামূল্যে প্রতিষেধক দিতে চান তিনি। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পরিমাণে প্রতিষেধক রাজ্য কিনতে চায়। কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে যেন দ্রুত প্রতিষেধক পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে যে সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা এখনও টিকা নেননি, স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা তাঁদের আহ্বান জানিয়েছেন। উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিয়ে নেওয়ার জন্য চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে। ভোটের কাজে তাদের অনেক ক্ষেত্রেই কাজে যেতে হবে। তাই নিজেদের এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে তাঁরা প্রতিষেধক নিন সেই আহ্বান করা হচ্ছে।’’ যদিও বৃহস্পতিবার একদিনের মধ্যে আর কতজন প্রতিষেধক নেবেন তা নিয়ে উদ্বেগে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের অনেকেই। তবে ৬ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ, প্রশাসনের কর্মী আধিকারিক, ভোটকর্মীদের প্রতিষেধক দেওয়া চলবে।
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিষেধক কেন্দ্র আগের থেকে অনেক বাড়ানো হয়েছে জেলাগুলোয়। তাতেও আশানূরূপ ফল মেলেনি। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশের দাবি, কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকায় সময় করে অনেকেই প্রতিষেধক নিয়ে উঠতে পারেননি। যদিও ১৬ জানুয়ারি থেকে প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছে। এবং নির্ধারিত দিনে যাঁরা নেননি তাঁদের দ্বিতীয়বারও বার্তা পাঠানো হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না-নিলে এরপর বাজার থেকে প্রতিষেধক কিনতে বা সাধারণ মানুষের মতোই নিতে হবে বলে আধিকারিকেরা জানান। তা ছাড়া অনেকেই যথন প্রতিষেধক নিয়েছেন তখন বাকিদের নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন দ্বিধা থাকা উচিত নয় বলেই তাঁরা মনে করেন। অনেকে অকারণে ভয় পাচ্ছেন বলেও চিকিৎসক, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ জানান।
মঙ্গলবার প্রতিষেধক কর্মসূচিতে যাদের টিকা নেওয়ার কথা কোচবিহারে তাঁদের ২০ শতাংশ, দক্ষিণ দিনাজপুরে ২২ শতাংশ, আলিপুরদুয়ারে ৪৪ শতাংশ, দার্জিলিঙে ৬১ শতাংশ, জলপাইগুড়িতে ৩৬ শতাংশ, কালিম্পঙে ৩০ শতাংশ, মালদহে ১০ শতাংশ, উত্তর দিনাজপুরে ৪৫ শতাংশ টিকা নিয়েছেন। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য জানান, বাকি স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে বৃহস্পতিবারের মধ্যে টিকা নেন তার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।