বক্সায় ধসের ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ১০০ মিটার দীর্ঘ রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
টানা এবং ভারী বৃষ্টিতে বক্সা পাহাড়ের কোলে অবস্থিত পাঁচটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সমতল থেকে। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি চলছে পাহাড়ে। তার জেরে বক্সা ফোর্টের কাছে বড়সড় ধস নামে। পাহাড়ের প্রায় ১০০ মিটার রাস্তা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন প্রায় হাজারখানেক বাসিন্দা।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বক্সাদুয়ারে শুধু বৃহস্পতিবারই ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। প্রায় একই পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে শুক্রবার রাতেও। যার জেরে জয়ন্তী ফরেস্ট বাংলো এলাকায় নদীভাঙন শুরু হয়। ধসের কারণে লেপচাখা, ওচলুম, তাসিগাঁও, লালবাংলো, বক্সা ফোর্ট— এই সব জায়গায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নেই বিদ্যুৎ সংযোগও। ধসের জেরে উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। ইতিমধ্যেই কাজে নেমেছে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন। উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে বন বিভাগ এবং বিদ্যুৎ বিভাগ।
টানা বৃষ্টির জেরে বিপাকে পড়েছেন পাহাড়ের প্রচুর মানুষ। ওচলুম গ্রামের বাসিন্দা মেরি ভুটিয়া বলেন, ‘‘পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দারা ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করত। প্রধান রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ধসের ফলে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘চলতি বছরে এই প্রথম বার এমন ব্যাপক ধস নামল।’’ অন্য দিকে, লেপচাখার বাসিন্দা সুনীতা কুজুর বলেন, ‘‘প্রধান সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর যাতায়াতে অসুবিধা যেমন হচ্ছে, তেমনই এই জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে কী করব, সেটাই ভাবাচ্ছে।’’ মেরিদের আশঙ্কা, কাউকে এই মুহূর্তে হাসপাতালে নিয়ে যেতে গেলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে তাঁদের। দুর্গম, বিকল্প ঘুরপথে খুব প্রয়োজন না-হলে কেউ যাতায়াতই করছেন না। বাড়ি থেকে বেরোনোও বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা।
নতুন করে ধসের ঘটনা প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, ‘‘ধসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ শুরু করেছে। পাহাড় কেটে এক জন মানুষ চলাচলের মতো রাস্তা বার করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগও খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে। গোটা পরিস্থিতির উপর আমরা নজর রেখেছি। সব সময় পর্যবেক্ষণ চলছে।’’