বিকল ফোন সারাই হচ্ছে না, ক্ষোভ চাঁচলে

ন্যাশনাল অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক তথা এনওএফএন কর্মসূচিতে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে অপটিক্যাল ফাইবার তারের মাধ্যমে জুড়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে বিএসএনএল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ০৮:০০
Share:

ন্যাশনাল অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক তথা এনওএফএন কর্মসূচিতে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে অপটিক্যাল ফাইবার তারের মাধ্যমে জুড়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে বিএসএনএল।

Advertisement

কিন্তু মাটি খুঁড়ে নতুন ওই কেবলের তার নিয়ে যাওয়ার সময় পুরনো কেবলের তার কাটা পড়ে দু’সপ্তাহ আগে থেকেই বিকল হয়ে পড়েছিল বহু ল্যান্ডলাইন টেলিফোন। আবার চার দিন আগে এক্সচেঞ্জে বাজ পড়ার পর অকেজো হয়ে গিয়েছে বাকি সব টেলিফোনগুলিও। কিন্তু বিকল টেলিফোন মেরামতিকে ঘিরে বিএসএনএলের উদাসীনতায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মালদহের চাঁচল মহকুমার গ্রাহকরা।

একেই মহকুমায় বিএসএনএলের গ্রাহক পরিষেবাকে ঘিরে ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ দীর্ঘ দিনের। যার জেরে ল্যান্ডলাইন টেলিফোন, ব্রডব্যান্ড থেকে শুরু করে মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা তলানিতে এসে ঠেকেছে। বিএসএনএলের পরিষেবা না পেয়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সংযোগ নিতে গ্রাহকদের ঝোঁক বাড়ছে।

Advertisement

এ বার এনওএফএন প্রকল্পে কাজের জন্য ফের টেলিফোন, ব্রডব্যান্ড পরিষেবা দিনের পর দিন বেহাল হয়ে থাকলেও কারও কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। তারপর শুক্রবার বাজ পড়ে মহকুমার সমস্ত টেলিফোন অকেজো হয়ে পড়ার পরেও কর্তৃপক্ষ কেন উদাসীন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি এই সংস্থার বেহাল পরিষেবার জন্য দফতরের কর্মীদের একাংশের গা ছাড়া মনোভাবকেই দায়ী করেছেন গ্রাহক ও কর্মীরাও একাংশ।

বিএসএনএল সূত্রেই জানা গিয়েছে, গ্রাহক পরিষেবা দিতে না পারায় চাঁচল মহকুমার বিভিন্ন এক্সচেঞ্জগুলির গ্রাহকদের অধিকাংশই ল্যান্ডলাইনের সংযোগ ছেড়ে দিয়েছেন। কমছে মোবাইল ফোন, ব্রডব্যান্ডের সংখ্যাও। কিন্তু সাধারণ গ্রাহকরা বিকল্প বেছে নিলেও সরকারি দফতরগুলিতে ভরসা বিএসএনএল। ফলে হামেশাই বিভ্রাটের জেরে ক্ষুব্ধ প্রশাসনও। চাঁচলের মহকুমাশাসক পুষ্পক রায় বলেন, ‘‘এখন সব কিছুই ইন্টারনেট নির্ভর। বিএসএনএলকে বারবার বলেও অবস্থা পাল্টাচ্ছে কই।’’

চাঁচলে বিএসএনএলের বেহাল অবস্থার জন্য দফতরের একাংশের গাফিলতিই দায়ী বলে অভিযোগ উঠেছে। কেননা মালদহ ছাড়াও বিএসএনএলের অন্যতম গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র রয়েছে চাঁচলে। কিন্তু তা নামেই। কেননা মোবাইলের সিমকার্ডটাও চাঁচলে মেলে না। শুধু সিমকার্ড নয়, অন্য কোনও পরিষেবার ক্ষেত্রে সমস্যা হলেও ভরসা সেই ৬৫ কিলোমিটার দূরের মালদহ।

অথচ এক সময় চাঁচল থেকে সব রকম সুবিধাই মিলত। কিন্তু বিএসএনএলের সংযোগ নিতে মালদহে যাওয়ার ভোগান্তি এড়াতে গ্রাহকরা বেসরকারি সংস্থার দিকে ঝুঁকছেন। আর দফতরের এই বেহাল অবস্থার মধ্যে এনওএফএন প্রকল্পে মাটি খুঁড়তে গিয়ে ল্যান্ডলাইন, ব্রডব্যান্ড পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়েছে। কিন্তু কর্তাদের কোনও হেলদোল না থাকায় ভোগান্তির জেরে ফের সংযোগ কমার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে!

জেলা টেলিকম আধিকারিক (টিডিএম) শিবরাম ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ল্যান্ডলাইনে কিছু সমস্যা রয়েছে। একটি যন্ত্রাংশ পাল্টাতে হবে। কিন্তু সেটা আমরা এখনও পাইনি। আর সিমকার্ড-সহ বাকি পরিষেবা চাঁচল থেকেই দেওয়ার কথা। কেন সেটা হচ্ছে না তা দেখছি।’’

চাঁচলের মহকুমা টেলিফোন আধিকারিক প্রবোধ ঝাঁ বলেন, এনওএফএন-এর কাজে তার কাটলে তা ওদেরই ঠিক করার কথা! আর এনওএফএন-এর মালদহের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার নিলাদ্রী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তার কাটলেই তা ঠিক করা হচ্ছে।’’ কিন্তু কর্তারা যাই বলুন, বাস্তবে গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে ভোগান্তি চলছেই চাঁচলের গ্রাহকদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement